নতুন মেরুকরণ, পাকিস্তানের পাশে নতুন বন্ধু রাশিয়া

  06-12-2016 08:30AM


পিএনএস ডেস্ক: দীর্ঘদিনের একটি অক্ষের নিঃশব্দ বদলের সম্ভাবনা আরো একটু উস্কে দিল ‘হার্ট অব এশিয়া’ মঞ্চ। সন্ত্রাস-বিরোধিতায় সরগরম অমৃতসরের সম্মেলন শেষে, এমনটাই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

অক্ষটি সেই স্নায়ু যুদ্ধের সময়কার। এক দিকে আমেরিকা-পাকিস্তান অন্য দিকে ভারত-রাশিয়া। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সমীকরণ বদলে গিয়ে অক্ষের নতুন বিন্যাসটি এখন এই রকম : এক দিকে রাশিয়া ও পাকিস্তান। আর এক পক্ষে ভারত-আমেরিকা। অথবা বলা ভালো, ভারত-আমেরিকা-আফগানিস্তান।

অমৃতসরের সম্মেলনে কাবুলের সঙ্গে নয়াদিল্লির যে ঘনিষ্ঠতা দেখা গেছে, তা এর আগে কখনো দেখা যায়নি বলেই দাবি করছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেখানে একযোগে আক্রমণ করেছেন ইসলামাবাদকে।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, অমৃতসর ঘোষণায় সন্ত্রাসের প্রশ্নে পাকিস্তানকে এ ভাবে চাপে ফেলার পিছনে হোয়াইট হাউসের দীর্ঘদিনের দৌত্য কাজ করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরে জানুয়ারি মাস থেকে এই ক্ষেত্রে মার্কিন নীতিতে কোনো বদল আসবে কিনা, সেটা অবশ্য স্পষ্ট নয় এখনো।

তবে আপাতত যেটা জানা যাচ্ছে, তা হল ‘অমৃতসর-ঘোষণা’য় হোয়াইট হাউসের পরোক্ষ সিলমোহর রয়েছে বলেই জানা গেছে।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, অমৃতসরের মঞ্চে পাকিস্তান কোণঠাসা হওয়ায়, অস্বস্তি গোপন রাখেনি মস্কো। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কথায়, ‘‘হার্ট অব এশিয়ায় উপস্থিত রাশিয়ার প্রতিনিধির বক্তব্য ও আচরণ থেকেই স্পষ্ট যে, তারা পাকিস্তানের পাশে। ক্রমশ ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ইসলামাবাদের সঙ্গে। উরির হামলার পর, ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও ইসলামাবাদের সঙ্গে মস্কোর সামরিক মহড়ার বিষয়টি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না।’’

হার্ট অব এশিয়া সম্মেলনে উপস্থিত আফগানিস্তানের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাশিয়ার কূটনীতিক জামির কাবুলভকে পাক-সন্ত্রাস নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের মঞ্চ ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের জন্য নয়। কে কোন দেশের বিরুদ্ধে কতটা চাপ তৈরি করতে পারল, তার খেলা নয়।’’কথিত পাক সন্ত্রাস নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান কাবুলভ।

কিন্তু দু’মাস আগের পাক-রুশ যৌথ সেনা মহড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘‘ভারতও তো আমেরিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমঝোতা করে এগোচ্ছে। তা নিয়ে আমরা কি কখনো আপত্তি করেছি? তুলনায় পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সামরিক সমঝোতা যথেষ্ট ‘মাঝারি’ মানের।’’

পরিস্থিতির এই বদলের দিকে সতর্ক নজর রাখছে ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে এ বার রাশিয়ার সঙ্গে আলাদা ভাবে সক্রিয় কূটনৈতিক দৌত্য চালানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। পাশাপাশি ‘ট্র্যাক টু’-র মাধ্যমে ইসলামাবাদের গতিবিধিও বুঝে নেয়ার চেষ্টা চলবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন