চীনের সাথে ব্যয়বহুল তেল পাইপলাইন নির্মান চুক্তি

  09-12-2016 01:05AM

পিএনএস ডেস্ক : আমদানিকৃত তেল সহজে ও কম খরচে পরিবহনের জন্য ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইন ও তেলবাহী জাহাজ নোঙ্গরের মুরিং বা ঘাট (mooring ) নির্মানের জন্য চীনের পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ব্যুরো-সিপিপিবি (China Petroleum Pipeline Bureau-CPPB)-এর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ সরকার।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় সিপিপিবি প্রেসিডেন্ট ঝাও ইউজিয়ান (Zhao Yujian) ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এর ডিরেক্টর সাইয়েদ মোহাম্মাদ মোজাম্মেল হক নিজ নিজ দেশের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দুটি পাইপলাইনের সংযোগ সুবিধাযুক্ত একক নোঙ্গর ঘাট (single mooring point) নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫,৪২৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১,০২১ কোটি এবং বিপিসি ১১১ কোটি টাকার যোগান দিবে। বাকি ৪,২৯৩ কোটি টাকার যোগান দিবে চীনের এক্সিম ব্যাংক (China Exim Bank)।
এই নতুন অবকাঠামোর ফলে বছরে ৯০ লাখ টন তেল খালাস করা সম্ভব হবে। প্রতি ৪৮ ঘণ্টায় ১লাখ ২০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল (crude oil) এবং প্রতি ২৮ ঘণ্টায় ৭০ হাজার টন ডিজেল খালাস করা সম্ভব হবে এই পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে।
এই প্রকল্পের আওতায় গভীর সমুদ্রবর্তী (offshore) ১৪৬-কিলোমিটার এবং উপকূলবর্তী (onshore) ৭৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মান করা হবে। এই পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে আমদানিকৃত তেল পক্রিয়াজাত করার জন্য গভীর সমুদ্র থেকে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (Eastern Refinery Ltd –ERL) স্থানান্তর করা হবে।
এছাড়া, বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী দ্বীপে অপরিশোধিত তেলের জন্য তিনটি এবং ডিজেলের জন্য তিনটি ট্যাংক স্থাপন করা হবে। আগামী ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের কার্যক্রম চালু করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দুই পাইপলাইনযুক্ত এই একক ঘাট (single mooring) নির্মানের মাধ্যমে আমদানিকৃত অপরিশোধিত এবং পরিশোধিত পেট্রোলজাত পণ্য খালাসের খরচ ও সময় সাশ্রয় হবে। এর ফলে বাংলাদেশের শোধনাগার (refinery) সামর্থ বাড়বে যা দেশের জ্বালানি (energy) নিরাপত্তা সুসংহত করবে বলে জানান বিপিসি।
বর্তমানে তেলজাতীয় পণ্যবাহী বড় জাহাজ সামাল দিতে বাংলাদেশকে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। কারণ একদিকে কর্ণফুলি নদীর নাব্যতা কম, অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠোমোগত সুবিধা সীমিত। এরফলে বড় জাহাজে করে আমদানিকৃত তেল ও পেট্রোলজাত পণ্য গভীর সমুদ্রে খালাস করা হয় এবং ছোট ছোট জাহাজে করে তা চট্টগ্রাম ইআরএল-এ নিয়ে আসা হয়।
ফলে, একলাখ টন ভার বহনে সক্ষম একটি ট্যাংকার (100,000 dead weight tonnage tanker) থেকে তেল ও পেট্রোলজাত পণ্য খালাস করতে ১১ দিন সময় লেগে যায়।
বিপিসি’র চেয়ারম্যান মাহমুদ রেজা খান বলেন, দুই পাইপযুক্ত একক ঘাট (single mooring) একবার নির্মান করা সম্ভব হলে এই সময় অনেকখানি কমে আসবে।
বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এই দুই পাইপ প্রকল্প চালু করা সম্ভব হলে প্রতিবছর বাংলাদেশের সাশ্রয় হবে ১,০০০ কোটি টাকা। জাহাজের পরিবহন ও খালাস খরচ বাবদ সরকারকে বর্তমানে এই বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে প্রতি বছর।
এই প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশের অতি প্রয়োজনীয় তেল আমদানি অনেক দ্রুততর হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। [সূত্র: দি ডেইলি স্টার]

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন