মিয়ানমারকে চাপ দিতে পার্লামেন্টে ৭০ ব্রিটিশ এমপির আহ্বান

  10-12-2016 01:44AM

পিএনএস ডেস্ক : রোহিঙ্গা মুসলিমদের কাছে জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ৭০ জন পার্লামেন্ট সদস্য। এ ৭০ জনের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পররাষ্ট্র দফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী টুইটারে খবরটি নিশ্চিত করেছেন। টুইটারে বিবৃতিটিও পোস্ট করেছেন তিনি।

বিবৃতিতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সাম্প্রতিক নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ্য করে সহিংসতার অবসান চাই।’

রোহিঙ্গাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অনুমোদন দিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারেরও অবশ্যই যোগ দেওয়া দরকার বলে উল্লেখ করেন তারা। সহিংস পরিস্থিতি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের যথাসম্ভব সহায়তার জন্যও আহ্বান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক তিক্ততা চলে আসছে রাখাইন বৌদ্ধ ও রাজ্যটিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে। দেশটিতে প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়, এমনকি দেশটির সরকার তাদের প্রাচীন নৃগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়নি। মিয়ানমারের জাতীয়তাবাদীরা জোর দিয়ে বলে আসছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী। তারা রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ না বলে ‘বাঙালি’ বলে থাকে। এ বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া।

রাখাইন রাজ্যের সহিংসতার ছবি
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি, এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে 'ক্লিয়ারেন্স অপারেশন' চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডেরও অভিযোগ তোলা হয় দুই দফায়। এবারের সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে, এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। রাখাইন রাজ্যে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরেও চলমান দমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করে দায় এড়াতে চাইছে মিয়ানমার সরকার। এমনকি শান্তিতে নোবেলজয়ী মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিও সম্প্রতি সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছেন,আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের চলমান অস্থিরতার নেতিবাচক দিকই কেবল দেখছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন