সমরাস্ত্র কেনায় শীর্ষে ভারত!

  22-02-2017 10:55AM


পিএনএস ডেস্ক: সুইডেনের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে যে, সমরাস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীতে সব দেশের ওপরে রয়েছে ভারত। ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে পৃথিবীতে মোট অস্ত্র আমদানির মধ্যে ভারত একাই কিনেছে ১৩ শতাংশ।

তালিকায় ভারতের পরেই রয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও আলজেরিয়া।

ভারত যে ধরনের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন, তাতে এই বিপুল অস্ত্র কেনাকে যৌক্তিক বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা । তবে অনেকেই আবার এই যুক্তির সঙ্গে একমত নন।
বেশির ভাগ উপসাগরীয় দেশ তাদের দেশের ভেতরে বা বাইরে কোনও না কোনও যুদ্ধে লিপ্ত- তাই তাদের অস্ত্র আমদানির পরিমাণ যে গত পাঁচ বছরে বেড়েছে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

কিন্তু সরাসরি কোনও যুদ্ধে না নেমেও ভারত কিভাবে বিশ্বে অস্ত্র আমদানিতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে এবং তালিকায় দুনম্বর সৌদি আরবের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি অস্ত্র আমদানি করেছে?

ভারতেও অনেককে বিস্মিত করেছে এ পরিসংখ্যান। বামপন্থী নেত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট বৃন্দা কারাটের মতে- ভারতের এই পদক্ষেপ রীতিমতো নিন্দনীয়।

তিনি বলছেন, ‘এ থেকে পরিষ্কার হয় যে এই অস্ত্র কেনাকেটা ভারতের অর্থনীতি ও ভারতের জনগণের ওপর কত বড় বোঝা তৈরি করছে। অথচ দেশের ভেতরে যখন বড় বড় প্রয়োজনগুলোর কথা হয়, তখন বলা হয় আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে রিসোর্স নেই, অর্থবল নেই।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিয়ম করে প্রায় প্রতিটি জনসভায় বলে থাকেন- ভারত তার শত্রুদের কাঁদিয়ে ছাড়বে- দুশমনরা ভারতের সেনাবাহিনীর শক্তির পরিচয় পাবে।

এই রণহুঙ্কার ধরে রাখতে গেলে অস্ত্র কেনাকেটা বন্ধ করা চলবে না, এটাই ভারতে সামরিক বিশেষজ্ঞদের রায়। স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিস্ট মারুফ রাজা বলছিলেন, ‘যেহেতু অস্ত্র কেনার জন্য ভারতের আর্থিক সঙ্গতি আছে এবং দেশের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও মাওবাদী বিদ্রোহীরা থেকে শুরু করে সীমান্তে পাকিস্তান বা চীনের মতো প্রতিবেশীরা আছে তাই কূটনৈতিক ও স্ট্র্যাটেজিক দৃষ্টিতে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই কেনাকেটার পক্ষে যুক্তি দিতেই পারেন।’

বৃন্দা কারাট বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চয় দরকার কিন্তু তার পাশাপাশি প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কও একটা বিরাট ব্যাপার। সেই সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা কি সঠিক পথে আছি? না কি আমরা এ ক্ষেত্রে অন্য কোনও দেশের স্বার্থে তাদের মিত্রশক্তির মতো কাজ করছি? তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক খেলার ঘুঁটি হিসেবে আমরা কি নিজেদের ব্যবহৃত হতে দিচ্ছি?’

ফলে ভারতের এই বিপুল অস্ত্র কেনাকেটার পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি আছে দুদিকেই। সূত্র: বিবিসি

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন