কানাডায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

  22-02-2017 06:45PM

পিএনএস: কানাডায় বসবাসকারীদের মধ্যে ৪০ শতাংশই থাকেন অন্টারিও প্রদেশের রাজধানী টরোন্টোতে। অন্টারিও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে দেশটির অন্য প্রদেশগুলো থেকে এগিয়ে।
শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি, ব্যবসা, আবহাওয়া সবকিছুতেই অন্টারিও আদর্শ। আর এই অন্টারিওতেই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ‘অন্টারিও ইমিগ্রান্ট নমিনি প্রোগ্রাম’ বা অন্টারিও অভিবাসী প্রকল্প (অনিপ) শুরু হতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে কানাডার অন্য প্রদেশগুলোতেও অভিবাসী প্রকল্পের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।

বিশ্বের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সময়ে কানাডা হতে পারে উন্নত বিশ্বে বসবাসে ইচ্ছুক যে কারো জন্যই প্রথম ও একমাত্র পছন্দ।

আর ২০১৭ সালে এসে কানাডা সরকার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য তাদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। স্নাতক ডিগ্রি ও কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে আর সঙ্গে ইংরেজি অথবা ফ্রেঞ্চ ভাষায় মোটামুটি দক্ষতা থাকলেই যে কেউ পরিবারসহ মাত্র ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে আবেদন করে কানাডায় স্থায়ী হতে পারবেন।

আর কানাডার এই অভিবাসন সুযোগ দেশটির নির্দিষ্ট কিছু আইন মেনে হয়। আছে বিভিন্ন ‘ক্যাটাগরি’, বিভিন্ন ‘প্রোগ্রাম’। আছে নানা আইনি জটিলতাও।

আর এই কারণে একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে অভিবাসী হওয়ার জন্য আবেদন করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

আর যারা ২০১৬ সালে আবেদন করতে পারেননি বা আবেদন করে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন।

কানাডার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ‘অনিপ’ খুলে যাচ্ছে সবার জন্য।

এই প্রোগ্রামটিকে বিবেচনা করা হয় পৃথিবীতে অভিবাসীদের কাছে সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত হিসেবে। আর এই বছরে যাঁরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে চান, তাঁদের এখনই উচিত অভিজ্ঞ আইনজীবীর কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া। যিনি সঠিক সময়ে ও সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদনটি জমা দেওয়ায় সহযোগিতা করবেন।

মূলত চারটি বিভাগে অন্টারিও প্রদেশে বসবাসের আবেদন করা যায়।

০১. ‘অন্টারিও এক্সপ্রেস এন্ট্রি’ বিভাগ

০২. সাধারণ বিভাগ (যেখানে নিয়োগকর্তার মারফত অভিবাসনের অনুমতি মেলে )

০৩. আন্তর্জাতিক ছাত্র বিভাগ

০৪. ব্যবসায় বিভাগ

শেষোক্ত এই ব্যবসায় বিভাগে আবার তিন ভাগে আবেদন করা যায়-

০১. উদ্যোক্তা বিভাগ

০২. করপোরেট বিভাগ

০৩. বিনিয়োগকারী বিভাগ (বিরত আছে)

এখানে যে কেউ যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন।

শুধু অন্টারিওতেই নয়। থাকতে পারবেন ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতেও। কানাডার অন্যতম সুন্দর এই প্রদেশে থাকতে চাইলে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরীক্ষা আইইএলটিএসে অন্তত ৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট পেতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতাও।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে অভিবাসী হিসেবে থাকতে গেলে, ‘এক্সপ্রেস এন্ট্রি’, ‘দক্ষ কর্মী’ ও ‘আন্তর্জাতিক ছাত্র’ এবং ‘দক্ষ কর্মী’ ও ‘আধা দক্ষ প্রাথমিক স্তরের কর্মী’ বিভাগে আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য আছে তাঁরা ‘বিনিয়োগকারী’ বিভাগেও পরিবারসহ আবেদন করতে পারবেন।

থাকার জন্য বেছে নেওয়া যাবে কানাডার অন্যান্য প্রদেশও
কানাডায় মোট ১১টি প্রদেশে অভিবাসন হয়। প্রতিটি প্রদেশ আলাদা আলাদা সময়ে এই অভিবাসীদের বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করে। অনেকগুলো প্রদেশেই হয়তো আবেদনের যোগ্যতা আমাদের সবারই আছে। অনেক প্রদেশেই অনেক শর্ত শিথিলযোগ্য। আবার অনেক প্রদেশ প্রতিবছর শর্ত পরিবর্তন করে নতুন কিছু শর্তারোপ করে। যেমন ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় এখন ‘নমিনি প্রোগ্রাম’ চালু রয়েছে। যা খুব দ্রুত অন্টারিওতেও চালু হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া খুব তাড়াতাড়িই চালু হতে যাচ্ছে কানাডার সমুদ্রতীরবর্তী প্রদেশ নোভা স্কটিয়ায় অভিবাসন প্রক্রিয়া।

কোন বিভাগে আবেদন করবেন?
কানাডায় অভিবাসনের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে এক্সপ্রেস এন্ট্রি প্রোগ্রামে আবেদন। অন্টারিও প্রদেশের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী সিআরএস পয়েন্ট (বিভিন্ন বিষয়ের সমন্বয়ে প্রাপ্ত পয়েন্ট) হলো ৪৭৫। যা কানাডায় অভিবাসনের ইতিহাসে অভিবাসনের জন্য চাওয়া সর্বনিম্ন পয়েন্ট।

আর তাই যাদের আইইএলটিএসে ভালো পয়েন্ট এবং সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা আছে তাদের জন্য আবেদনের সবচেয়ে ভালো সময়। কারণ নতুন বছরের ঘোষণায় এই কম পয়েন্ট না ও থাকতে পারে।

কেয়ারগিভারস প্রোগ্রাম
এক্সপ্রেস এন্ট্রি বিভাগে সেবিকাদের (নার্স) জন্য সুবিধাজনক প্রোগ্রাম হচ্ছে কেয়ারগিভারস প্রোগ্রাম। বাংলাদেশ থেকে এই প্রোগ্রামে আবেদন করে সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে পরিবারসহ কানাডায় স্থায়ী হওয়া যায়।

এই বিভাগে কেবলমাত্র সার্টিফিকেটধারী নার্সরা আবেদন করতে পারবেন। এই কেয়ারগিভারস প্রোগ্রামে অন্যসব প্রচলিত প্রোগ্রামের মতো ৬৭ পয়েন্ট বা ১২০০ সিআরএস পয়েন্টের প্রয়োজন নেই।

নাসিংয়ে যাদের বিএসসি বা ডিপ্লোমা ডিগ্রি রয়েছে অথবা ন্যূনতম ৫ আইইএলটিএস পয়েন্ট রয়েছে তারা সরাসরি আবেদন করে চাকরিসহ কানাডায় যাওয়ার সুযোগ পাবেন। শিশু শিক্ষা ও যত্ন, বৃদ্ধদের স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা এবং প্রাথমিক চিকিৎসাই হবে এদের প্রধান কাজ।

আবেদন করতে কী প্রয়োজন
কানাডার সর্বশেষ ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম অনুযায়ী আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৫৩ বছরের মধ্যে। শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে স্নাতক কিংবা ডিপ্লোমা। অভিজ্ঞতা থাকতে হবে কমপক্ষে দুই বছর।

এ ছাড়া দক্ষতা মূল্যায়ন সনদ (Trade Skilled Assessment Certificate) ও প্রাদেশিক মনোনয়ন (Provincial Nomination) ছাড়া কোনো আবেদন জমা দেওয়া হয় না।

বিশেষজ্ঞ মত ও পরামর্শ
স্বপ্নের দেশ কানাডায় অভিবাসনের জন্য বিস্তারিত জানতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ, দৈনিক আজকের অগ্রবাণী পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং সাউথ এশিয়ান ল-ইয়ার্স ফোরামের সভাপতি ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ (রাজু) জানান, বসবাস উপযোগিতা ও চাকরির সুবিধার জন্য অন্টারিও প্রদেশ সবার পছন্দের শীর্ষে। আর এই বিষয়ে খুঁটিনাটি সমস্যা এড়িয়ে নিশ্চিত অভিবাসনের জন্য তিনি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন।

বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ
কানাডায় অভিবাসন বিষয়ে পরামর্শের জন্য ঢাকার উত্তরায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৫১ সোনারগাঁও জনপথে অবস্থিত খান টাওয়ারে ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন লিমিটেড’ দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির অফিসের ফোন নম্বরে কথা বলে আপনার প্রাথমিক প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন। ফোন নম্বরগুলো হলো- ০১৯৬৬০৪১৫৫৫, ০১৯৯৩৮৪৩৩৪০, ০১৯৬৬০৪১৮৮৮, ০১৯৬৬০৪১৩৩৩।

এ ছাড়া বিস্তারিত পরামর্শের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ই-মেইল ঠিকানায় ([email protected]) পাঠিয়ে রাখতে পারেন আপনার পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত। যোগাযোগ করতে পারেন হোয়াটসঅ্যাপ অথবা ভাইবারে + ৬০১৪৩৩০০৬৩৯ নম্বরে। এ ছাড়া ভিজিট করতে পারেন www.wwbmc.com. ওয়েবসাইটে।


পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন