মমতাকে দিল্লির চিঠি

  30-03-2017 03:31PM


পিএনএস ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ রাখা হলে তা আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি ছড়াবে বলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

এতে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে নাম মিলে যাওয়ার ফলে আন্তর্জাতিকভাবে প্রস্তাবিত ‘বাংলা’ নাম বিভ্রান্তি ছড়াবে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত কেন্দ্রের একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অফিসে এসেছে বলে জানা গেছে।

দায়িত্বশীল সূত্রে এই খবর নিশ্চিত হওয়া গেলেও রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবশ্য এই বিষয়ে ‘সরকারিভাবে’ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সূত্র জানিয়েছে, গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে দুটি কারণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

প্রথম কারণ হিসেবে বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে নামটি মিলে যাওয়ায় বিভ্রন্তি ছাড়ানোর বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গ ’বাংলা’ হলে প্রতিবেশী বাংলাদেশের পাশে ‘বাংলা’ রাজ্য আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে।

এছাড়াও, এতে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আশঙ্কাও করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র দফতরকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সুসম্পর্কের কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় কারণের ব্যাখা করে বলা হয়, ভারতের অন্য যেকোনো রাজ্যের নাম স্থানীয় ভাষা, হিন্দি ও ইংরেজিতে একইভাবে উচ্চারণ করা হয় এবং লেখাও হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গকে বাংলায় ‘বাংলা’, হিন্দিতে ‘বাঙ্গাল’ এবং ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’ এই তিন ভাষায় তিনটি রূপান্তরও মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়াবে। এছাড়াও, সরকারি কাগজপত্রে কিংবা আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়বে পশ্চিমবঙ্গ। সে কারণে পশ্চিমবঙ্গের নামের নতুন নাম যাই হোক না কেন সেটা বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে যেন একইভাবে উচ্চারণ বা লেখা সম্ভব হয় সে বিষয়টির ওপরও গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গ নামের পরিবর্তে নতুন নাম ‘বাংলা’ রাখার প্রস্তাব পাশ করে। একইসঙ্গে হিন্দিতে ‘বাঙ্গাল’ এবং ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’ করার কথাও প্রস্তাবে বলা হয়।

ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, বিধানসভায় পাশ হওয়া এই প্রস্তাবটি প্রথমে লোকসভায় পাশ হতে হবে। সেখান থেকে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাশ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠাবে কেন্দ্রীয় সরকার।

রাষ্ট্রপতির অনুমোদন হওয়ার পর সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশ করা হবে। লোকসভায় প্রস্তাব পেশ করার আগে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পুঙ্খানুপঙ্খভাবে পরীক্ষা করা বিধানও রয়েছে। সেই বিধানের আওতায় কেন্দ্রীয় সরকার দুটি বিষয়ে তাদের মতামত জানিয়েছে বলেও জানা গেছে।

এর আগে ২০১১ সালেও মমতার সরকার একবার পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাশ করে দিল্লির অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেবারও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন