প্রেমিকাকে বাঁচাতে প্রেমিকের একি কাণ্ড!

  23-04-2017 09:52PM

পিএনএস ডেস্ক : প্রেমিকা ভীষণ অসুস্থ। পাঁচ লাখ রুপি হলেই তাঁকে সুস্থ করা যাবে—চিকিৎসকের এই আশ্বাসে ভরসা করেছিলেন মনোহর ওরফে মনু নামের এক প্রেমিক। সে সুস্থ হলেই বাঁধা হবে স্বপ্নের ঘর। কিন্তু পোশাক কারখানায় কাজ করা মনোহর এত টাকা পাবেন কোথায়!

কিন্তু মনোহর যে প্রেমিকাকে কথা দিয়েছেন! যে করেই হোক তাঁকে সুস্থ করে তুলবেন। তাই প্রেমিকার জন্য মহাকাণ্ড করে বসলেন তিনি। একে একে ৫১টি মোটরসাইকেল চুরি করেছেন তিনি। আর মোটরসাইকেল বিক্রির টাকাতেই চলছে প্রেমিকার চিকিৎসা। কিন্তু শেষ বেলা এসে ধরা পড়ে জেলে রাত কাটাতে হচ্ছে প্রেমিক মনোহরকে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুর বোম্মানহাল্লি এলাকায়।

আজ রোববার ভারতের দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দিয়েই শনিবার গ্রেপ্তার হন বছর ২৩-এর মনোহর।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেঙ্গালুরুর হোঙ্গাসান্দ্রা এলাকার বাসিন্দা মনোহর পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। সেখানেই এক সহকর্মীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনে বিয়ে করারও পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু ভীষণ অসুস্থ হওয়ায় গত জানুয়ারিতে ওই প্রেমিকা কাজ ছেড়ে দিয়ে নিজের বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে চলে যান। পরে বেঙ্গালুরুতে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে মনোহরকে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলেন প্রেমিকা। প্রেমিকার কথামতো ঘর ভাড়া নিয়ে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবও কিনে ফেলেন তিনি। কিন্তু এসব তো হলো, চিকিৎসার পাঁচ লাখ রুপি তিনি পাবেন কোথায়! অবশেষে প্রেমিকার চিকিৎসার খরচ জোগাতে মরিয়া মনোহর শুরু করেন একের পর মোটরসাইকেল চুরি। আর এভাবেই তিনি একে একে ৫১টি মোটরসাইকেল চুরি করেন। প্রেমিকা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি, তাঁর চিকিৎসার জন্য মনোহর কোথায় অর্থ পাচ্ছেন।

পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে মনোহর জানিয়েছেন, তাঁর প্রেমিকা জন্ডিস ও হরমোনসংক্রান্ত রোগে ভুগছেন। এই চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ রুপি চেয়েছেন চিকিৎসক। সে অনুযায়ী মনোহর চিকিৎসার টাকা জোগাতে মোটরসাইকেল চুরি করা শুরু করেন। তিনি মোট ৫১টি মোটরসাইকেল চুরি করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ২৫ লাখ রুপি।

পুলিশ আরও জানায়, বোম্মানহাল্লি ও এর আশপাশের এলাকায় প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেল চুরি হওয়ায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। এলাকার পেশাদার মোটরসাইকেল চোরদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। কিন্তু তারাও এসবের ব্যাপারে কিছু জানেন না। তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে এসব কোনো এক নতুন চোরের কাণ্ড। পরে ওই নতুন চোরকে ধরতে ফাঁদ পাতে পুলিশ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘নতুন ওই চোরকে ধরতে আমরা লিফলেটে একটা বিজ্ঞাপন প্রচার করি। বিজ্ঞাপনে বলা হয়, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশ কিছু পুরোনো মোটরসাইকেল কেনা হবে। যোগাযোগের জন্য এক পুলিশ সদস্যের নম্বর দেওয়া হয়েছিল। এই বিজ্ঞাপন দেখে মনোহর ফোন দেন। পরে তাঁকে মোটরসাইকেল নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে আসতে বলা হয়। অন্যের চুরি করা মোটরসাইকেল বেচতে আসায় তাঁকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।’

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন