তুরস্কে গুলেন বিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ১,০০০

  27-04-2017 01:51AM

পিএনএস, ডেস্ক: তুরস্কের নির্বাসিত নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন এক হাজারেরও বেশী লোককে গ্রেপ্তার করেছে তুর্কি সরকার।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে উৎখাতের যে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা হয়েছিল, সেই ধারার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এসব লোক।

এসব লোককে গ্রেপ্তার করার পরও আরো ২ হাজার ২০০ জনকে গ্রেপ্তারের তালিকায় রেখেছে দেশটির সরকার। কর্তৃপক্ষের দাবি, তালিকায় থাকা এসব লোক তুরস্কের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে গোপনে সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছে।

তুর্কি সরকার বারবার দাবি করছে, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে এরদোগানকে উৎখাতে জড়িত ছিল যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত তুরস্কের নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারীরা। তবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন তিনি।

সম্প্রতি তুরস্কে অনুষ্ঠিত গণভোটে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে রায় দিয়েছেন দেশটির জনগণ। এর ফলে আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত তার ক্ষমতায় থাকার পথ প্রশস্ত হলো। তা ছাড়া এত দিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিক পদে থাকলেও এবার এরদোগান পাচ্ছেন নির্বাহী ক্ষমতা। সংবিধান পরিবর্তন করে এ ক্ষমতা সংহত করবেন তিনি।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলায়মান সয়োলু বুধবার বলেছেন, ৭২টি প্রদেশে গোপনে কাজ করা ১ হাজার নয়জন ইমামকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে তিনি তুরস্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তুরস্কের গণমাধ্যমে জানানো হয়, তুরস্কের মোট ৮১টি প্রদেশের ৩ হাজার ২২৪ জনের নামের তালিকা করা হয়েছে, যাদের পুলিশ খুঁজছে। এর মধ্যে শুধু ইস্তাম্বুলে রয়েছে ৩৯০ জন সন্দেহভাজন। এখন ১ হাজার নয়জনকে গ্রেপ্তার করার পর বাকিদের খোঁজা হচ্ছে।

ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সময় ২৪৯ জন নিহত হন। তুর্কি সরকারের অভিযোগ, পুলিশ, সামরিক বাহিনী ও বিচার বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুলেনপন্থিরা ঢুকে পড়ে গোপনে সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছে।

সারা দেশে গণগ্রেপ্তারের অভিযান চালানোর কিছু সময় পরে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, ‘আমরা এফইটিও (গুলেনপন্থি)-এর সদস্যদের সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও বিচার বিভাগ থেকে ছেঁকে ফেলার কাজ করছি।’

বুধবারের আগ পর্যন্ত তুর্কি সরকারের দেয়া তথ্যমতে, পুলিশের ১০ হাজার ৭০০ এবং সামরিক বাহিনীর ৭ হাজার ৪০০ সদস্যসহ মোট আটক করা হয়েছে ৪৭ হাজার জনকে। তুরস্কের সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ হাজার হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। বিরোধীদলপন্থি গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েক ডজন সাংবাদিককে।

ইউরোপের সংসদীয় পরিষদ মঙ্গলবার তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন দ্রুত মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়। তবে এরদোগানের অভিযোগ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্কের জন্য ইউরোপের দরজা বন্ধ করছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, ইউরোপজুড়ে ইসলামভীতি বাড়িতে তোলা হচ্ছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন