স্ত্রীর অজান্তে জন্মনিরোধক ব্যবহার না করলে ধর্ষণ!

  28-04-2017 09:35PM

পিএনএস ডেস্ক : স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক সংসর্গের সময় স্ত্রীকে না জানিয়ে মাঝপথে হুট করে জন্মনিরোধক (কনডম) সরিয়ে ফেলা যৌন নির্যাতনের শামিল—যা ধর্ষণের পর্যায়ে পড়ে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘কলাম্বিয়া জার্নাল অব জেন্ডার অ্যান্ড ল’-এর একটি আইনবিষয়ক গবেষণায় এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওমেন’স ল সেন্টারের লিগ্যাল ফেলো আলেজান্দ্রা ব্রোডস্কি। আলেজান্দ্রা ব্রোডস্কি গবেষণায় বলেন, শারীরিক সংসর্গের সময় স্ত্রীকে না জানিয়ে মাঝপথে হুট করে কনডম সরিয়ে ফেলা যৌন নির্যাতনের শামিল। এটা ধর্ষণের পর্যায়েও পড়ে।

তিনি বলেন, শারীরিক সংসর্গের সময় এই ঘটনাটি সঙ্গী-সঙ্গিনীদের মাঝে নিয়মিত ঘটে। কিন্তু পরিস্থিতির শিকার সঙ্গিনী ভয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন না। এটা আইনের দৃষ্টিতেও যৌন নির্যাতনের পর্যায়ে পড়ে। তা ছাড়া এ ঘটনায় স্ত্রী বা সঙ্গিনীর যৌন রোগের সংক্রমণ ও অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওমেন’স ল সেন্টারের এই লিগ্যাল ফেলো বলেন, এ গবেষণার মূল উদ্দেশ্যগুলোর একটি হচ্ছে, এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করা, যার মাধ্যমে মানুষ এসব সমস্যা ও অভিজ্ঞতার ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে। এ ছাড়া ‘মন্দ যৌনতা’ ও ‘যৌন নির্যাতনের’ মতো বিষয়গুলো প্রতিহত করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আলেজান্দ্রা ব্রোডস্কিকে এ গবেষণায় সহযোগিতা করেছেন পিএইচডি শিক্ষার্থী রেবেকা। তিনি বলেন, কাজ করার সময় অসংখ্য নারীর ফোন তিনি পেয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, শারীরিক সংসর্গের সময় তাঁদের না জানিয়ে মাঝপথে হুট করে স্বামী বা সঙ্গী কনডম গোপনে সরিয়ে ফেলতেন। এমনকি রেবেকার নিজেরও এ ধরনের যৌন নির্যাতনের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।

গবেষণা সহযোগী রেবেকা বলেন, সবার অভিজ্ঞতাই একই ধরনের। এটা ঠিক ধর্ষণ কি না, তা আমি নিশ্চিত নই। তবে ওই নারীরা এর মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, কিন্তু সঙ্গীকে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছেন না। তাঁরা বুঝতে পারছেন না, তাদের ওই সময় কী করা উচিত।’

আলেজান্দ্রা ব্রোডস্কি বলেন, এ ধরনের আচরণের কারণে, না চাইলেও নারীদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া যৌন রোগের সংক্রমণ হয়, যাতে শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন নারীরা। এ কারণেই এটা সবমিলে একধরনের ভয়ানক যৌন নির্যাতন।

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের যৌন নির্যাতন বর্তমানে যে আইন প্রচলিত আছে, তার আয়ত্তে আসে না। তাই এ ব্যাপারে নতুন আইন করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, অসংখ্য নারী এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু কীভাবে প্রতিহত বা প্রতিরোধ করবেন, তা তারা জানেন না। সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন