‘পাথর নয়, কাশ্মীরিরা আমাদের ওপর গুলি ছুড়লে খুশি হতাম’

  29-05-2017 10:24AM


পিএনএস ডেস্ক: ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেছেন, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে প্রতিবাদকারীরা পাথর না ছুড়ে গুলি ছুড়লে খুশি হতাম। কাশ্মীরিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে তিনি একথা বলেছেন।

রবিবার পিটিআই-এর বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ খবর জানিয়েছে।

জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেন, সত্যিকার অর্থে আমি চাই তারা (কাশ্মীরি) পাথরের বদলে আমাদের ওপর গুলি ছুড়ুক। আমি তখন খুশি হব। আর তখনই আমি যা চাই তা করতে পারব।

মানবঢাল হিসেবে কাশ্মীরিদের ব্যবহার সমর্থন করে ভারতীয় সেনাপ্রধান জানান, যখন স্থানীয়রা পাথর ও পেট্রোল বোমা ছুড়ছে তখন সেনাদের তিনি ‘ধৈর্য্য ধরো ও মারা যাও’ বলতে পারেন না। তিনি মনে করেন, পাথর ছোড়ার চেয়ে স্থানীয়রা যদি গুলি ছুড়ত তাহলে সেনাবাহিনীর জন্য কাজ করা সহজ হত।

কাশ্মিরের সহিংসতাকে ‘ডার্টি ওয়ার’ উল্লেখ করে ভারতীয় সেনাপ্রধান আরও জানান, এ ধরনের যুদ্ধে নতুন নতুন উপায়ে যুদ্ধ করতে হয়। তিনি বলেন, এটা একটি ছায়াযুদ্ধ (প্রক্সি ওয়ার) এবং ছায়াযুদ্ধ হচ্ছে ডার্টি ওয়ার। এটা পরিচালিত হয় নোংরা উপায়ে। যখন কেউ সামনাসামনি যুদ্ধ করে তখন নিয়ম মেনে চলা হয়। এটা ডার্টি ওয়ার... ফলে এখানে অভাবনীয় পদ্ধতি কাজে লাগানো হয়।

উল্লেখ্য, গত মাসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর লেটুল গগৈ বিক্ষুব্ধদের পাথর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর জিপের বনেটে এক স্থানীয় কাশ্মীরিকে বেঁধে রেখে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশিত হলে ভারতজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সমালোচনার পরও ভারতীয় সেনাবাহিনী মেজর লেটুলকে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য পদক প্রদান করে। এই পদক প্রদানও সমালোচনার জন্ম দেয়।

সবজার নিহতের পর কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সবজারকে ত্রালের রাতসুনা এলাকায় দাফন করা হয়। সেখানে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। সবজার নিহতের প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট হুরিয়ত কনফারেন্স দুই দিনের হরতালের ডাক দিয়েছে।

এর আগে গত বছর জুলাইয়ে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। ওই সময়ও ব্যাপক প্রতিবাদ হয়। ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর বেপরোয়া গুলিতে প্রায় একশ জন নিহত হন। বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মিলিয়ে আহত হন প্রায় ১২ হাজার মানুষ। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে কারফিউ এবং হরতাল। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন