ষড়যন্ত্র ঠেকাতে ফের মৃত্যুদণ্ড চান এরদোগান

  17-07-2017 08:44AM


পিএনএস ডেস্ক: ফের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে প্রশ্ন। প্রয়োজনে ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ হাত কেটে নিতেও দ্বিধা নেই। সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার এক বছর পূর্তিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এরদোগানের গলায় শোনা গেল এমন গরম গরম কথাই।

গত শনিবার ইস্তানবুলের বসফোরাস সেতুতে হাজির হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। এক বছর আগে এখানেই অভ্যুত্থানের চেষ্টায় জড়িত সেনার হাতে প্রাণ হারান অন্তত ৩৬ জন। তার পর সেখানেই এরদোগানের প্রথম বক্তৃতা। পরের বক্তৃতা আঙ্কারায় তুরস্কের পার্লামেন্টের কাছে। সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার সময় ষড়যন্ত্রকারীরা বোমা মেরেছিল পার্লামেন্টেও। সেখানে ভরা দর্শকদের সামনে গর্জে ওঠেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। তাঁর দাবি, সামরিক অভ্যুত্থানের সমর্থকদের বিচারের সময়ে গুয়ান্তানামোর মতো পোশাক পড়তে হবে।


এরদোগান জানান, যারা এ ভাবে দেশকে পঙ্গু করে দিতে চেয়েছিল, তাদের ‘‘মাথা কেটে দেবে সরকার’’। কারণ ওই অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারীরা ‘অবিশ্বাসী। ’ তাঁর কথায়, ‘‘দেশের শত্রুরা নির্বিচারে আমাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। ’’ এই সূত্রেই বিরোধীদের তীব্র সমালোচনাও করেন তিনি।

তুরস্কে ২০০৪ সালে মৃত্যুদণ্ড রদ করা হয়েছিল। তাই তা ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছেন এরদোগান।

সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার সময়ে আঙ্কারা আর ইস্তানবুলের আকাশে ছেয়ে যায় যুদ্ধবিমান। রাস্তায় নামে ট্যাঙ্ক। তবে পথে নেমে সেই অভ্যুত্থান রুখে দেয় সব রাজনৈতিক দল। সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে তারাই চ্যালেঞ্জ জানায় সেনার সেই অংশকে। তুরস্ক সরকারের দাবি, এই ষড়যন্ত্রের পিছনে ছিলেন ফেতুল্লা গুলেন নামে এক নির্বাসিত নেতা, যিনি আমেরিকা নিবাসী হলেও তাঁর অনুগামীর সংখ্যা যথেষ্ট।

এই রকম ষড়যন্ত্র ঠেকাতেই মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োজন বলে মনে করেন এরদোগান। তাঁর সুরে গলা মেলান ভিড়ে দাঁড়ানো আম জনতা। যদিও রবিবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ জুনকার বলেছেন, ‘‘তুরস্ক যদি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হিসেবে টিকে থাকার পথ নিজেরাই বন্ধ করে দেবে। ’’

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার থেকেও এখন ভয়ঙ্কর সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। সরকারি চাকরি থেকে হাজার হাজার মানুষকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া সরকারি চাকরিতে, পুলিশ, সেনা অফিসার, বিচারক, শিক্ষক এবং সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত লোকজনকে কখনো কখনো আটক করা হচ্ছে। প্রায়শই কোপের মুখে পড়ছেন দক্ষিণপন্থী সমর্থকরা। গত শুক্রবারই অতিরিক্ত সাত হাজার জনকে বরখাস্ত করেছে তুরস্ক সরকার। ১৫০-রও বেশি সাংবাদিক এখন জেলে। তাই ইইউ এর ১২ বছরের এই সদস্য দেশটি আদৌ কত দিন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন