আজ ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল প্রকাশ

  20-07-2017 11:01AM

পিএনএস ডেস্ক:ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানান হিসাব-নিকাশ। আজ এর অবসান ঘটছে। আজ ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। দ্বিমুখী এ নির্বাচনে এগিয়ে আছেন বিজেপির প্রার্থী বিহারের সাবেক গভর্নর রামনাথ কোবিন্দ। বিরোধী জোটের প্রার্থী মীরা কুমার অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন। সোমবারের এ নির্বাচনে ইতিমধ্যে উভয়পক্ষে ব্যাপকহারে ক্রস ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ক্রস ভোট দিয়েছেন বহু সংসদ সদস্য ও বিধায়ক। এতে কোবিন্দের পাল্লা অনেকটাই ভারি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচনে প্রায় ৯৯.৪ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। সোমবার ভোট শেষে বিজেপির দাবি, ৭০ শতাংশ ভোট পাচ্ছেন কোবিন্দ। ফলে প্রথমবারের মতো বিজেপি মতাদর্শের কোনো রাষ্ট্রপতি পাচ্ছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল। আজ ফলাফল ঘোষণা হলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। ২৪ জুলাই ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষ হবে। এর পরদিন ২৫ জুলাই শপথ নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবন দিল্লির রাইসিনা হিলে উঠবেন নতুন রাষ্ট্রপতি। কোবিন্দ ও মীরা দু’জনই দলিত সম্প্রদায়ের প্রার্থী হওয়ায় নিন্মবর্ণের একজন হিন্দু ভারতের সর্বোচ্চ পদে বসতে যাচ্ছেন।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা: ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকেল-৫৩ অনুযায়ী রাষ্ট্রের সব নির্বাহী ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। দেশটির রাষ্ট্রপতি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্র ছাড়া তার সব ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীন। রাষ্ট্রপতি ভারতের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের সব শাখার আনুষ্ঠানিক প্রধান এবং সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তিনি চাইলে রাজ্যসভা ও লোকসভার অধিবেশন আহ্বান ও বাতিল করতে পারেন।

লোকসভা ভাঙার ক্ষমতাও তার অধিকারে রয়েছে। সংসদে পাস হওয়া প্রতিটি বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতিক্রমে আইনে পরিণত হয়। রাজ্যের রাজ্যপাল, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টগুলোর প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল, প্রধান ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ও অন্য সদস্যবৃন্দ, অন্যান্য দেশে নিযুক্ত অ্যাম্বাসেডার ও হাইকমিশনারকে নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি।

দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ড হ্রাস করার ক্ষমতাও রাখেন তিনি। তার অনুমোদন ছাড়া সংসদে কোনো অর্থবিল পেশ করা যায় না। এদিকে নির্বাচনের আগেই ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন ছিলেন মীরা। দিন শেষে তার এ আশঙ্কা সত্যে পরিণত হয়। উভয়পক্ষে ক্রস ভোটের ঘটনা ঘটলেও এক্ষেত্রে বিজেপির প্রার্থীই এগিয়ে রয়েছেন। নির্বাচনে সব মিলে ৪০টির বেশি রাজনৈতিক দল কোবিন্দকে সমর্থন দিয়েছে। এনডিএ জোটের বাইরে কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সঙ্গী নীতিশ কুমারের জনতা দল (ইউ) কোবিন্দকে সমর্থন করেছে। এছাড়া এআইএডিএমকে, বিজু জনতা দল, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতিসহ কয়েকটি দলের সমর্থন নিয়ে কোবিন্দ মোট ভোটের ৬০ শতাংশের বেশি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচনে জয়ের জন্য প্রয়োজন ৫০ শতাংশের বেশি ভোট।

অন্যদিকে, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের পক্ষে আছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি (এএপি), রাষ্ট্রীয় জনতা দল, কমিউনিস্ট পার্টি, ডিএমকে, জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স। এসব দলের ভোট মীরা পেলেও তা হবে মোট ভোটের ৩৯ শতাংশের কিছু বেশি। আজ ফলাফল ঘোষণার মাধ্যমে এসব সমীকরণের সত্যতা মিলবে কিনা, তা জানা যাবে।



পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন