মধ্যস্থতা করতে দুই দিনের সফরে সৌদি কাতার ও কুয়েতে এরদোগান

  23-07-2017 11:46AM


পিএনএস ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশি দেশগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্বের অবসানে মধ্যস্থতা করতে রবিবার দুই দিনের সফরে সৌদি আরব, কুয়েত ও কাতার সফরে যাচ্ছেন্ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান।

তবে কাতারের অন্যতম বিশ্বস্ত সহযোগী হওয়ায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এরদোগান খুব বেশি সফল হবেন বলে মনে করা হচ্ছে না।

সন্ত্রাসবাদকে সহায়তা করার অভিযোগে গত মাসে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর প্রতিবেশি কাতারের সম্পর্ক তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে। তবে, তাদের এই অভিযোগ দোহা অস্বীকার করেছে।

এ ঘটনা গত কয়েক বছরের মধ্য এই অঞ্চলে সবচেয়ে খারাপ কূটনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি করে। সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে প্রতিবেশিরা কাতারের কাছে এক ডজনেরও বেশি দাবি উত্থাপন করে। এসব দাবির মধ্য আল জাজিরার টেলিভিশনের বন্ধ করে দেয়া, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং তুর্কি সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করার কথা বলা হয়।

এরদোগান এসব দাবিকে বেআইনি বলে মন্তব্য করে এই অঞ্চলের মুসলিম সংহতি এবং দৃঢ় বাণিজ্য সম্পর্কের প্রয়োজনে চলমান সঙ্কট অবসানের জন্য আহ্বান জানান।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর এরদোগান বলেন, ‘ভ্রাতৃপ্রতিম দেশগুলোর মধ্যে চলমান বিরোধের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজ করে যাব। রাজনৈতিক সমস্যাগুলো হচ্ছে অস্থায়ী, পক্ষান্তরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক হচ্ছে স্থায়ী এবং আমি আশা করি উপসাগরীয় দেশগুলোর বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের বিষয়টি বেছে নিবেন।’

এই সঙ্কটে এরদোগান দোহার পক্ষে অবস্থান নিলেও প্রতিবেশিদের বিচ্ছিন্নতার বিষয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। মূলত এই উদ্বিগ্নতা থেকেই রবিবার তিনি সৌদি আরব, কুয়েত ও কাতার সফরে যাচ্ছেন।

তুর্কি সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাত হচ্ছে তুরস্কের সপ্তম বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। গত বছর তুরস্ক প্রায় ৫.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে দেশটিতে। অন্যদিকে, সৌদি আরব ১১ নম্বর এবং মিশর ১৩ নম্বর রপ্তানি বাজার। এছাড়াও তুরস্ক সৌদি আরবের কাছে তার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করতে চায়।

সাবেক তুর্কি কূটনীতিক এবং কার্নিয়ে ইউরোপের বিশ্লেষক সিনান উলেগান বলেন, ‘দোহার প্রতি দৃঢ় সমর্থন সত্ত্বেও আঙ্কারার দিক থেকে এরদোগানের এই সফরের কিছুটা গুরুত্ব রয়েছে। সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে উচ্চতর স্তরের সংলাপের ক্ষমতা তুরস্কের এখনো রয়েছে।’

তিনি জানান, কাতারের প্রতি সর্বোচ্চ সমর্থন দেয়ার কারণে এক অসুবিধাজনক অবস্থান থেকে আঙ্কারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছে।

উলেগান বলেন, ‘সঙ্কট নিরসনে তুরস্ক কতটা সম্পন্ন করতে পারে এবং কতটা কার্যকর সম্ভাব্য মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে তা বিবেচনায় নিলে প্রত্যাশা খুবই কম।’

কৌশলগত গুরুত্ব
এই বিতর্ক এখনো পর্যন্ত অবাস্তব প্রমাণিত হয়েছে এবং এরদোগান সৌদি আরবকে সঙ্কট সমাধান করতে আহ্বান জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট রেক্স টিলারসন গত সপ্তাহে উপসাগরীয় দেশগুলো সফরে যান কিন্তু কোনো কোনো সমাধান ছাড়াই তাকে ফিরে আসতে হয়।

শুক্রবার টিলারসন বলেন, তিনি সন্ত্রাসী অর্থায়ন মোকাবেলা করার জন্য একটি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কাতারের প্রচেষ্টায় সন্তুষ্ট এবং অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য আরব দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র: রয়টার্স

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন