তিন তালাক নিষিদ্ধ: কী বলছেন কলকাতার মুসলমানরা?

  23-08-2017 09:03AM

পিএনএস ডেস্ক: ভারতের সর্বোচ্চ আদালত গতকাল মঙ্গলবার এক রায়ে মুসলমানদের তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে। যেভাবে পর পর তিনবার তালাক উচ্চারণ করে অথবা চিঠি লিখে, সামাজিক মাধ্যম বা ফোনে তিনবার তালাক উচ্চারণ করে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেওয়া হয়, তার বিরুদ্ধে পাঁচজন মুসলিম নারী সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে এক সাংবিধানিক বেঞ্চ এই রায় দেয়।

এই রায় নিয়ে আজ সারা দেশেই ব্যাপক চর্চা হচ্ছে। আলোচনা চলছে মুসলমান প্রধান এলাকাগুলোতেও। বাদ নেই কলকাতাও।

কলকাতার অন্যতম মুসলিম প্রধান এলাকা পার্ক সার্কাস লাগোয় এন্টালি-পদ্মপুকুরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে তিন তালাক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে আলোচনা। ওই রায় নিয়ে এই এলাকার এক শিক্ষক মুহম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলো সুপ্রিম কোর্টের রায়কে কীভাবে দেখছেন? তিনি বলেন, " বিজেপি সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিষয়টাকে তুলে এনেছে। তারা চাইছে আমাদের পারিবারিক আইনে হস্তক্ষেপ করতে। কিন্তু দেখানো হচ্ছে যে মুসলিম মহিলারা এই প্রথার ভিক্টিম হচ্ছেন। কিন্তু বিচ্ছেদ কোন সমাজে, কোন ধর্মে হয় না বলুন তো? হিসাব করলে দেখা যাবে অন্যান্য ধর্মের থেকে মুসলিম সমাজে তালাকের হার কম।"

এ সময় রায় নিয়ে ক্যারাটে এক প্রশিক্ষক এম এ আলি আর আর্শাদ হুসেইন বলেন, "আমার তো মনে হয় তালাক শব্দটাই তুলে দেওয়া উচিত। আমার মা-বোনের ঘর কেন নষ্ট হবে? শুধু মুখে বলে দিলাম আর বিচ্ছেদ হয়ে গেল? হতেই পারে কোনও নেশা না করে এমনিই বলেছি, হতে পারে তার পেছনে অন্য কোনও কারণ আছে, কিন্তু সংসারটা তো ভেঙ্গে গেল! এটা কোথাকার নিয়ম, কোথাকার শিক্ষা?"

মি. হুসেইন বলেন, তা হলো তিন তালাক প্রথা শরিয়তে রয়েছে আজ থেকে না, ১৪০০ বছর ধরে.. এটা কোনও মানুষের তৈরি আইন নয়। সেটা কেউ বদলাতে পারবে না। গোটা পৃথিবীও যদি এক হয়ে গিয়ে চেষ্টা করে এই নিয়ম পাল্টাতে সেটা সম্ভব না। সে নিজে বদলে যাবে, তবুও শরিয়ত বদল করতে পারবে না কেউ।

তিনি আরো বলেন, "বি জে পি সরকার কিছু কম বুদ্ধি সম্পন্ন - সভ্যতা ভব্যতা না জানা কিছু নারীকে জড়ো করে তাদের দিয়ে কিছু বলালো আর শরিয়তের আইন পাল্টে গেল - তা কিছুতেই হবে না। সুপ্রিম কোর্টকে এই রায় বদলাতেই হবে। চারদিক থেকে এমন চাপ তৈরি হবে - দেখবেন আদালত তার রায় বদল করতে বাধ্য হবে। "

একই এলাকার সালেহা তাবাসুম নামে আরেকজন এই রায় নিয়ে বলেন, "আসলে বিষয়টা হলো তিন তালাক শরিয়তে যেভাবে আছে, অনেকে তো সেটা মানে না। হোয়াটসঅ্যাপ বা ফোনে পর পর তালাক বলে দেয়। এটা জায়েজ না, সেটা মানা যাবে না। আর এভাবে হঠাৎ করে তালাক দিয়ে দেওয়ার পরে সেই মেয়েদের সংসারটা তো নষ্ট হয়েই যায়, তাদের খুব স্ট্রাগলও করতে হয়। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় অনেককে, বলে যে তার আর ওই বাড়িতে থাকার অধিকার নেই। " সূত্র: বিবিসি

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন