রাখাইনে গণহত্যা পর্যালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র

  16-09-2017 01:34AM

পিএনএস ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যা বা জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া চলছে কি না তা পর্যালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-সহকারী মন্ত্রী পেট্রিক মারফি মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে আগামী সপ্তাহে মিয়ানমার যাচ্ছেন।

এ সফরকালে তিনি মানবিক সহায়তা সংস্থা ও সংবাদ কর্মীদের রাখাইনের সংঘাতময় এলাকায় যেতে দেয়ার অনুরোধ জানাবেন। মারফি রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

ওয়াশিংটনে আজ অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার নোয়ার্ট এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, পেট্রিক মারফি গত বৃহস্পতিবার বার্মার রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র দফতরে ডেকেছিলেন। বার্মার চলমান ইস্যুতে পেট্রিক মারফিই সবচেয়ে বেশি সক্রিয় এবং ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। মারফি রাষ্ট্রদূতের সাথে বার্মার জটিল পরিস্থিতি নিয়ে বলিষ্ঠভাবে আলোচনা করেছেন।

নোয়ার্ট বলেন, বার্মার সাথে আমাদের জোরালো সংলাপ চলছে। বার্মা সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে সে দেশ নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিয়মিতই আলোচনা করছেন। পেট্রিক মারফিও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন। ইস্যুটিকে আমরা গুরুত্বের সাথে নিয়েছি এবং কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

এই সফরে মারফি বাংলাদেশও যাচ্ছেন কি না - প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে তিনি বার্মা যাচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

মিয়ানমারের ভেতরে ও বাইরে থাকা উদ্বাস্তুদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ছয় কোটি ৩০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে। এ সহায়তা বাংলাদেশও গ্রহণ করেছে।

জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্ক আসছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় তার সাথে দেখা করবেন কি না জানতে চাওয়া হলে নোয়ার্ট বলেন, এ কর্মসূচি সম্পর্কে আমি অবগত নই।

মিয়ানমারের জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের অবস্থান কি - প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। অনেক নৃশংসতার খবর ও বিভৎস চিত্র আমরা দেখছি।

তবে সরকার হিসাবে নিরপেক্ষভাবে এগুলোর যথার্থতা যাচাই করার জন্য যথেষ্ট তথ্য আমাদের হাতে নেই। আমাদের নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে এগুলো যাচাই করতে হবে। এ লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে অনেক অংশীদারদের সাথে আমরা কাজ করছি।

আমরা জানি যে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি জটিল। সেখানে আমাদের কিছু লোক থাকলেও তা যথেষ্ট না। অতিরিক্ত তথ্যের জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে অনেক মানবিক সংস্থার সাথে কাজ করি। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের উপগ্রহ, গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। আর কত দিন বা সপ্তাহ পর জানা যাবে আসলে কি ঘটছে। আর যারা জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়ার অভিযোগ তুলেছে - তারা কি মিথ্যা বলছে? এমন প্রশ্নের জবাবে নোয়ার্ট বলেন, আমরা নিশ্চিত হতে চাই যে আমাদের পর্যালোচনাটা সঠিক। এটি একটি টেকনিক্যাল ইস্যু।

পর্যালোচনার জন্য অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। এটা অতটা সহজ না। তবে আমি বলতে পারি যে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

এই মূল্যায়নের জন্য কতটা সময়ের প্রয়োজন - জানতে চাওয়া হলে মুখপাত্র বলেন, এর নির্ধারিত কোনো সময়সীমা আমি দিতে পারব না। তবে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ আসা পর্যন্ত মূল্যায়ন চলবে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন