স্কাই নিউজ সাংবাদিকের ভাষায় রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভয়াবহতা

  19-09-2017 12:02PM

পিএনএস ডেস্ক:ব্রিটেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের এক সাংবাদিকের বর্ণনায় ফুটে উঠেছে রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভয়াবহতা। স্কাই নিউজের রিপোর্টার আশিষ জোশি এক রিপোর্টে সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

দুই সহকর্মীকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কাজ করছিলেন। একদিন মিয়ানমার সংলগ্ন বাংলাদেশ সীমান্তে ছোট্ট একটি মুদি দোকানের সামনে দেখতে পান ধোঁয়ার কুণ্ডলী। আশিষ লিখেছেন, ‘আমি শুনেছিলাম মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জ্বালাও পোড়াও অব্যাহত রেখেছে কিন্তু দিনের বেলা এবং এতটা প্রকাশ্যে ওরা এমনটা করছে তা ধারণা করিনি। আমি ভেবেছিলাম আন্তর্জাতিক ক্ষোভ আর নিন্দা এড়াতে হয়তো তারা রাতের অন্ধকারে এমন দমন-পীড়নমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

মোহাম্মদ সায়েম নামের এক প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে আশিষ জানান, যে গ্রামটি জ্বলছিল সেখানে প্রায় ছয় হাজার মানুষের বসবাস। সায়েমের দাবি, দুই-তিন আগে ওই আগুন জ্বলা শুরু হয়। তিনি নিজের চোখে দেখেছেন। মোবাইলে তোলা বেশ কয়েকটি ছবিও দেখান এই সহিংসতার।

আশিষ জানান, একটু পর তারা দেখতে পেয়েছেন এক দল মানুষ সারিবদ্ধ হয়ে আসছে। তারা ওই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে আলাপ করতে শুরু করলেন।

আশিষ বলেন, ‘প্রথমেই আমরা কথা বললাম, নুর খালিম নামের এক নারীর সাথে। নুর খালিম নামের ওই নারী তার পা দেখালেন। সেগুলো গোলাপি রঙের হয়ে আছে, চামড়া যেন খুলে আসছে। ক্ষত থেকে তখনো রক্ত বের হচ্ছে। তার বাড়িতে আগুন দেয়ার পর এমনই পরিণতি হয়েছে। আর সেই জ্বলন্ত পা নিয়েই কয়েকদিন ধরে হাঁটার পর বাংলাদেশে পৌঁছেছেন।

ছয়-সাত বছরের এক মেয়ের কোলে মুজাহিদ নামের পাঁচ দিন বয়সী এক শিশু। দেখলেই বোঝা যায় এ নবজাতক অসুস্থ। পেছনে তাকিয়ে দেখলাম মুজাহিদের মা রাবিয়াকে। সন্তানের মতো তার অবস্থাটাও করুণ। সন্তান দেয়ার পর পাঁচ দিন হেঁটে এখানে এসেছেন।

আরেক রোহিঙ্গা নারী ফাতিমা জানান, আমরা সাতজন একসাথেই ছিলাম। আমি আমার চার ছেলে আর দুই মেয়ে। কিন্তু পাহাড়ের পথ ধরে পালিয়ে আসায় চার ছেলেকে হারিয়েছি। সেনারা আমার পাঁচ বছর ও ১০ বছর বয়সী ছেলেকে গুলি করে মেরেছে। বাকি দুই ছেলের একজনের বয়স দুই, আরেকজন ছিল তিন বছর বয়সী। ক্ষুধার যন্ত্রণায় ওরা মরে গেছে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন