আজ জার্মানিতে ভোট

  24-09-2017 11:44AM

পিএনএস ডেস্ক: মুখোমুখি চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল ও তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মার্টিন শুলজ। জার্মানিতে জাতীয় নির্বাচনে এই দু’প্রার্থীর মধ্যে কার গলায় উঠবে জয়ের মালা তা নির্ধারণ হবে আজই। টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও নির্বাচনের আগে দুই অংকে ফ্রন্টরানার হয়ে এগিয়ে আছেন অ্যাঙ্গেলা মারকেল। তিনি চতুর্থ দফায় চ্যান্সেলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেট পার্টি (সিডিইউ)। জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসটাগে এই দলটিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ করার লড়াইয়ে এবং একই সঙ্গে নিজের পরবর্তী ভাগ্য নির্ধারণে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ মারকেল। তার সিডিইউ হোটের অংশীদার সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) মার্টিন শুলজ তার সামনে বড় প্রতিপক্ষ।

আজ স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা এবং তা বিকাল ৬টা পর্যন্ত চলার কথা। ভোট গ্রহণ শেষেই বুথফেরত জরিপের পল প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। এবারের নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে। কারণ, একদিকে ব্রেক্সিট। অন্যদিকে সম্প্রতি বিশ্বের বড় বড় দেশে জাতীয়তাবাদের পক্ষে উত্থান। জার্মানি কোনদিকে যাবে সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।

বলা হচ্ছে, জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসটাগে এবার ৬টি রাজনৈতিক দল স্থান করে নিতে পারে। এমনটা হলে তা হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথম এমন ঘটনা। আর তা হলে বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের গাঠনিক কাঠামোতে পরিবর্তন আসতে পারে। এখানে উল্লেখ্য, অ্যাঙ্গেলা মারকেলকে আন্তর্জাতিকভাবে দেখা হয় স্থিতিশীলতার একজন শক্তিধর নারী হিসেবে। তিনি ২০০৫ সাল থেকে জার্মানির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি অভিবাসী বা শরণার্থীদের বিষয়ে কোমল হৃদয়ের। ইউরোপে যখন শরণার্থী সঙ্কট তীব্র তখন তিনি জার্মানির সীমান্ত খুলে দেন। আশ্রয় দেন বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে। এ জন্য তাকে রাজনৈতিকভাবে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে কয়েকটি নির্বাচনে তার দলের পরাজয় ঘটেছে। এ জন্য জাতীয় নির্বাচনে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে অনেকেই সন্দিহান হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই ক্ষতি দৃশ্যত তিনি কাটিয়ে উঠেছেন। ভোটের আগে জনমত জরিপে তিনি এগিয়ে ছিলেন দুই অংকে। অন্যদিকে তার সামনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সোশাল পার্টির (এসপিডি) মার্টিন শুলজ। এ দলটি মধ্য-বামপন্থি।

অ্যাঙ্গেলা মারকেলের জোট সরকারের অংশীদতার তিনি। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে তিনি মারকেলের নীতি, রাজনীতির কড়া সমালোচনা করেছেন। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্টিন শুলজ। তিনি বড় চ্যালেঞ্জ দাঁড় করে দিলেও রাজনীতিতে ১২ বছরের চ্যান্সেলর হিসেবে অভিজ্ঞ মারকেল। তিনি বিশ্ব দরবারে ক্ষমতাধর নারী হিসেবে পরিচিত। ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়, তিনি ক্ষমতায় থাকলে জার্মানিতে স্থিতিশীলতা থাকবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অখন্ডতায় তার অবদান অনেক। বৃটেন যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, সমঝোতা করছে তখন তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরো শক্ত করে বেঁধে রাখার চেষ্টা করছেন। ওদিকে এই নির্বাচনে উগ্র ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি দল (এএফডি) ও পার্লামেন্টে আসন করে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য এই দলটি ইসলাম বিরোধী।

এ যাবত পর্যন্ত এ দলটি দেশের শুধু আঞ্চলিক সরকারে আসন পেয়েছে। কিন্তু তারা অভিবাসন ইস্যুতে যে প্রচারণা চালায় তাতে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। তারা অভিবাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। মারকেল সরকারের তীব্র সমালোচনা করে। ফলে তাদের জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় এবার তারা বুন্দেসটাগে জায়গা করে নেবে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের। জার্মানিতে ১৮ বছরের বেশি বয়সী প্রায় ৬ কোটি ১৫ লাখ বৈধ ভোটার এই নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন। নির্বাচনে দুটি করে ভোট দিতে হচ্ছে এক একজন ভোটারকে। একটি ভোট হলো তাদের পার্লামেন্টারি আসনের প্রার্থীর জন্য। অন্য ভোটটি তারা কোন রাজনৈতিক দলকে বেশি পছন্দ করে তা নির্ধারণের জন্য।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন