তিকি-তাকা জাদুর কাছে হেরে গেল ইরান

  23-10-2017 09:00AM


পিএনএস ডেস্ক: পরিকল্পিত ফুটবল উপহার দিয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের শেষ চারে উন্নীত হলো স্পেন। রোববার ভারতের গৌহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে তারা ৩-১ গোলে হারাল প্রতিযোগিতার ডার্ক হর্স ইরানকে। গ্রুপ পর্বের তিনটি এবং প্রি কোয়ার্টার-ফাইনাল, মোট চারটি ম্যাচেই দুরন্ত ফুটবল খেলেছিল এশিয়ার দেশটি। জার্মানির মতো সুপার পাওয়ারকে গ্রুপ লিগে ইরান চূর্ণ করেছিল ৪-০ ব্যবধানে। কিন্তু কোয়ার্টার-ফাইনালে প্রতিপক্ষকে সেভাবে মাথা তুলতেই দেয়নি স্পেন। যোগ্য দল হিসাবেই তারা ইরানকে হারিয়েছে।

কোচিতে ব্রাজিলের কাছে প্রথম ম্যাচে হারের পর স্পেনের কোচ সান্তিয়াগো স্যাঞ্চেজ বলেছিলেন, ‘রক্ষণের ভুলত্রুটি শুধরে নিতে পারলে আমরা অনেক দূর পৌঁছাব।’ গ্রুপের বাকি দু’টি ম্যাচে আর গোল হজম করেনি স্প্যানিশ আর্মাডা। দু’টি নক-আউট ম্যাচে দু’বার জালে বল ঢুকলেও স্পেনের রক্ষণ এই মুহূর্তে প্রতিযোগিতার প্রারম্ভিক পর্বের তুলনায় অনেক বেশি সংগঠিত। শেষ চারটি ম্যাচে এক ডজন গোল করা ইরান তা এদিন হাড়েহাড়ে টের পেল।

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছিল ব্রাজিলের ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে নিয়ে। তবে ক্লাব না ছাড়ায় শেষ পর্যন্ত ভারতে আসা হয়নি এই প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন ফুটবলারটির। ভিনিসিয়াসের পরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল স্পেনের অ্যাবেল রুইজ। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে চারটি গোল ছিল এই ছেলেটির। মেসি-জাভি-ইনিয়েস্তাদের লা মাসিয়া থেকেই উঠে এসেছে অ্যাবেল। অনেকেই তার মধ্যে দাভিদ ভিয়ার ছায়া দেখছেন। রোববার ইরানের বিরুদ্ধে ম্যাচের ১৩ মিনিটে প্রথম গোল তারই। সের্গিও গোমেজের পাস পেয়ে তার প্রথম শট আংশিক প্রতিহত করে ইরানের এক ডিফেন্ডার। ফিরতি বল ডান পায়ের শটে জালে জড়িয়ে দিতে ভুল করেনি অ্যাবেল রুইজ (১-০)। প্রারম্ভিক পর্বে এই গোল স্পেনকে প্রাধান্য বিস্তার করতে সাহায্য করে।

অ্যাবেল রুইজের পাশাপাশি ফেরান তোরেসের দিকেও লক্ষ্য রাখুতে হবে ফুটবলপ্রেমীদের। ভ্যালেন্সিয়ার এই ফুটবলারটি অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলছে। ইরানের বিরুদ্ধে একটি গোল করেছে সে, করিয়েছে আরো একটি। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ শানানোই বেশি পছন্দ ফেরানের। তবে গোলের জন্য মাঝেমধ্যেই ভিতরে ঢুকে আসা তার অভ্যাস। প্রথমার্ধে অ্যাবেল রুইজ ও ফেরান তোরেস দু’টি সহজ সুযোগ না হারালে স্পেনের জয় আরো মসৃণ হতো।

উল্লেখ্য, বার্সেলোনার র্যাডারে প্রবলভাবে রয়েছে ফেরান তোরেসের নাম। তাকে পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে কাতালন ক্লাবটির।

স্পেনের কোচ সান্তিয়াগো স্যাঞ্চেজ জানতেন, ইরানের আক্রমণাত্মক ফুটবল রোখার জন্য প্রয়োজন মাঝমাঠে প্রাধান্য বিস্তার করা। মিডফিল্ডারদের প্রতি তার নির্দেশ ছিল, ফাঁকা জায়গা তৈরি করো এবং ক্রমাগত পাস খেলো। সের্গিও গোমেজ-ফেরান তোরেসরা কোচের পরামর্শ মাঠে রূপায়িত করায় ইরান সমস্যায় পড়ে।

প্রথমার্ধে ০-১ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, দ্বিতীয়ার্ধে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করবেন ইরান কোচ। কিন্তু স্পেনের তিকি-তাকা’র সামনে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়ে এশিয়ার দেশটি। ৬০ মিনিটে ম্যাচের সেরা গোলটি আসে সের্গিও গোমেজের পা থেকে। ফেরান তোরেসের পাস পেয়ে বক্সের বাইরে থেকেই ঝলসে ওঠে গোমেজের বাঁ পা। গোলার মতো শট ইরানের গোলরক্ষককে হার মানিয়ে জালে আশ্রয় নেয় (২-০)। সাত মিনিট পরেই প্রতিপক্ষের ফিরে আসার চেষ্টায় পানি ঢেলে দেয় স্পেন। ডানদিক থেকে মোহার ক্রস আসে ইরান বক্সে। মার্কারকে বোকা বানিয়ে তাতে পা ছুঁইয়ে গোল ফেরান তোরেসের (৩-০)। ৭০ মিনিটে ইরানের সান্ত্বনাসূচক গোলটি করে সায়িদ করিমি (৩-১)। তবে তা স্পেনের আধিপত্যে বিন্দুমাত্র আঁচড় কাটতে পারেনি।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন