পিএনএস ডেস্ক : দৃশ্যত স্ত্রী গ্রেসি মুগাবেকে ক্ষমতার স্বাদ দিতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। তার ক্ষমতার মেয়ার প্রায় ৪০ বছর ছুঁই ছুঁই। তার পরেই ক্ষমতার মসনদে স্ত্রীকেই দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই সরিয়ে দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন মনাঙ্গাগওয়াকে।
এতেই জিম্বাবুয়ের রাজনীতির পারদ তুঙ্গে উঠতে থাকে। রাজধানীতে মঙ্গলবার রাতেই হারারেবাসী প্রত্যক্ষ করেন সেনা টহল।
সাজোয়া যান। এটা স্পষ্টত সামরিক অভ্যুত্থান হলেও সেনাবাহিনী কৌশলে একে অভ্যুত্থান বলছে না। জিম্বাবুয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মরগান সাঙ্গিরাইয়ের সাবেক একজন রাজনৈতিক সহযোগী অ্যালেক্স মাগাইসা বলেন, যা-ই বলেন, যেভাবেই বলেন এটা অন্য নামে একটি সামরিক অভ্যুত্থান। তারা দেখাতে চাইছে যে, এখনও দেশের নেতা আছেন প্রেসিডেন্ট মুগাবে। কিন্তু বাস্তবে সেখানে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে রয়েছে অবশ্যই সেনাবাহিনী।
উল্লেখ্য, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন মনাঙ্গাগওয়াকে এক সময় দেখা হতো, রবার্ট মুগাবের পরবর্তী উত্তরসূরি হিসেবে। বলা হতো রবার্ট মুগাবে যদি ক্ষমতা থেকে সরে যান অথবা তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মারা যান তাহলে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন এমারসন মনাঙ্গাগওয়া। কিন্তু সেক্ষেত্রে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছেন মুগাবে। তিনি অকস্মাৎ বরখাস্ত করলেন এমারসন মনাঙ্গাগওয়াকে।
এর কারণ, তিনি চাইছিলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে তার স্ত্রী গ্রেসি’কে বসাতে। এতে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বেঁধে ওঠে। এমন কি তার ঘনিষ্ঠ সমর্থকরাও এই ক্ষোভের সঙ্গে যোগ দেন। স্ত্রী গ্রেসি মুগাবেকে নিয়ে এত এলাজিং কেন জিম্বাবুয়েতে! তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দিলে ক্ষতি কি! ক্ষতি হলো জিম্বাবুয়ের মানুষের।
গ্রেসি মুগাবের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। তিনি অন্য দুনিয়ার মাটিতে পা রাখেন। বিপুল অর্থের কেনাকাটা করতে তিনি বিদেশে ছুটে যান। ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি যখন দেশকে গ্রাস করছে, দেশ ঋণে জর্জরিত তখন তিনি বিদেশে যান শুধু শপিং করতে। এ জন্য তাকে স্থানীয়রা গুচি ব্রান্ডের নামের সঙ্গে মিলিয়ে ‘গুচি গ্রেসি’ নামে ডাকেন। অন্যদিকে বরখাস্ত হওয়া সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন মনাঙ্গাগওয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর।
তারা তাকে ভীষণ সমর্থন করে। এখানে উল্লেখ্য, দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন এমারসন মনাঙ্গাগওয়া। তাকে বরখাস্ত করার পর আত্মগোপনে চলে গেছেন। তিনি এখন কোথায় আছেন তা কেউ জানেন না। টেলিভিশনে সেনা মুখপাত্র মোয়ো বলেছেন, তারা অপরাধীদের টার্গেট করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এসব অপরাধী বা ক্রিমিনালরা চারপাশ থেকে প্রেসিডেন্টকে ঘিরে রেখেছে।
তাদের কারণে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার জন্য সেনাবাহিনীর এই বিশেষ ব্যবস্থা। তিনি আরো দাবি করেছেন, দেশ অন্য একটি স্তরে পৌঁছে গেছে। তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন, প্রেসিডেন্ট মুগাবে ও তার পরিবার নিরাপদে আছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
পিএনএস/জে এ /মোহন
জিম্বাবুয়েতে সামরিক অভ্যুত্থান, নারীই মূল কারণ!
15-11-2017 03:25PM