রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নীতি 'বর্ণবিদ্বেষী'

  22-11-2017 02:09AM

পিএনএস ডেস্ক: রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার যে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে আসছে, তাকে 'বর্ণবিদ্বেষের' সঙ্গে তুলনা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। দুই বছরের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক এ মানবাধিকার সংস্থা গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ওপর কয়েক দশক ধরে চলা নির্যাতনের পরিণতি হিসেবে আজকের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে সবার আগে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করতে হবে। নইলে দেশে ফিরেও তাদের ভাগ্য বদলাবে না।

১০০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে একটি বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবে 'একঘরে' রাখার প্রচারণা শুরু হয়েছে কয়েক দশক আগে। আর এই প্রচারণা চালিয়েছে খোদ রাষ্ট্রক্ষমতা। রোহিঙ্গাদের ওপর যে ধরনের দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে, তা 'বর্ণবিদ্বেষের' শামিল।

রাখাইনকে 'অপরাধের দৃশ্যপট' আখ্যা দিয়ে অ্যামনেস্টির গবেষণা সেলের জ্যেষ্ঠ পরিচালক আনা নেস্টেট বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর বর্বরতা শুরু হয়েছে কয়েক দশক আগে। গত তিন মাসের পরিস্থিতি ওই বর্বরতার পরম্পরা। তিনি বলেন, মিয়ানমারের ক্ষমতাসীনরা রোহিঙ্গাদের পুরো বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে এবং তাদের বর্ণবিদ্বেষের মতো ভয়ংকর একটা পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

রোহিঙ্গা বিদ্বেষ চরম আকার ধারণ করে মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের মধ্য দিয়ে।

ওই আইনের ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা কার্যত রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ে। অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়, 'তার পর থেকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না দিতে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রচারণা শুরু হয়। তারা রোহিঙ্গাদের বাঙালি কিংবা 'অবৈধ অভিবাসী' প্রমাণে জোর তত্পরতা চালাতে থাকে। '
মিয়ানমার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে আছেন অ্যামনেস্টির লাউরা হেই। তিনি বলেন, 'এ ধরনের প্রচারণার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্রমে হতাশা জন্মাতে থাকে। ' তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে বেশ বেগ পেতে হবে। কারণ বেশির ভাগ রোহিঙ্গার কাছেই এমন কোনো রাষ্ট্রীয় নথি নেই, যা প্রমাণ করে, তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। '

আনা নেস্টেট বলেন, 'রোহিঙ্গাদের আইনি ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা এবং মিয়ানমারের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা সবচেয়ে জরুরি। নইলে বর্ণবিদ্বেষী একটা ব্যবস্থার মধ্যে প্রত্যাবর্তনের কথা রোহিঙ্গাদের বলা যাবে না। ' সূত্র : এএফপি।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন