রাম রহিমের বাড়িতে পুলিশ কী কী পেল

  23-11-2017 07:46AM

পিএনএস ডেস্ক: ডেরা নয়, তার ঠিকানা এখন রোহতক জেল। ক’দিন আগে অভিযোগ উঠেছিল, জেলে নাকি রাজার হালে দিন কাটাচ্ছে রাম-রহিম। সিরসাতে নিজের ডেরাতেও কার্যত রাজার হালেই থাকত সে। এর প্রমাণ তদন্তকারীরা আগেই পেয়েছিলেন। এ বার আরো চমকে দেওয়ার মতো তথ্য তাদের হাতে এল।

ডেরা সচ্চা সৌদায় বুলেটপ্রুফ বাড়িতে থাকত গুরমিত রাম রহিম সিংহ। ডেরাতে তার নিবাস তিন তলা ‘তেরা বাস’ ছিল এ দিক থেকে একেবারে সুরক্ষিত। বাড়ির সব দরজা, জানলার কাচ বুলেটপ্রুফ। তা ছাড়া সেখানকার আসবাবপত্র এবং বিলাসের বহর রাজা বাদশাদেরও হার মানিয়ে দেয়।

তদন্তকারীদের দাবি, তার ঘরে ছিল এলাহি আয়োজন। ড্রেসিং রুমে ২৯টি বিরাট কাঠের তাক। প্রতিটির উচ্চতা প্রায় ১৪ ফুট। পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অট্টালিকায় রয়েছে বিশাল স্ক্রিনের টিভি, দামি আসবাব এবং নানা বিলাসের সামগ্রী। এমনকী খাবার জল আসত বিদেশ থেকে।

পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে রাম রহিমের বাড়ি থেকে পাওয়া জিনিসের একটি তালিকা বানানো হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, বিদেশ থেকে আনা পানীয় জলের বোতল, প্রায় একশো জোড়া জুতো, টুপি, পারফিউম, ডিজাইনার পোশাক। ভিওয়ানির পুলিশ সুপার সুরেন্দ্র সিংহ ভোরিয়া জানিয়েছেন, রাম রহিমের বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে তারা দুই ব্রিফকেস ভর্তি হার্ড ডিস্ক, বুলেটপ্রুফ লেস্কাস, হার্ড ডিস্ক-সহ ছ’টি প্রজেক্টর, পেন ড্রাইভ এবং ওয়াকিটকির সেট পেয়েছেন।

বাবার ওই অট্টালিকা থেকেই সাধ্বীদের হস্টেলে যাওয়ার গোপন সুড়ঙ্গের খোঁজও পেয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। ‘তেরা বাস’-এর পশ্চিম দিকে রয়েছে মহিলাদের নিবাস। অট্টালিকারই একটি ঘরে কাঠের আলমারি দিয়ে ঢাকা জানলা থেকে শুরু হয়েছে সুড়ঙ্গ। সোজা গিয়ে থেমেছে সাধ্বী হোস্টেলে। এই পথ পেরিয়েই বাবা নিত্য দিন মহিলা নিবাসে যাতায়াত করতেন বলে মনে করছেন অফিসারেরা।

রাম রহিম কি জেলেও রাজার হালে! উঠছে প্রশ্ন
গুফা ছেড়ে এখন রোহতকে। আর সেখানে দিব্যি রাজার হালেই ‘জেল খাটছে’ গুরমিত রাম রহিম সিংহ। জামিনে ছাড়া পেয়ে আজ এমনটাই দাবি করল রাহুল জৈন নামে গুরমিতের এক জেল-সঙ্গী।

জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে। জেল কর্তৃপক্ষ বরাবরই বলে আসছে, রোহতক জেলে সাধারণ অপরাধীর মতোই রাখা হচ্ছে গুরমিতকে। যা আজ পুরোপুরি নস্যাৎ করে দিয়েছে রাহুল। তাঁর কথায়, ‘‘সব বাজে কথা! ‘বাবা’র জন্য জেলে কোনও কড়াকড়িই নেই। আলাদা খাবার, রাজকীয় খাতির— সবই তো চলছে দেখছি। বাইরে থেকে কেউ দেখা করতে এলে সবার জন্য বরাদ্দ থাকে ২০ মিনিট। অথচ ওর জন্য দু’ঘণ্টা!’’

রাহুলের আরও দাবি, আসার পর থেকে গুরমিতকে জেলেই দেখা যায় না। সশ্রম কারাদণ্ড তো দূরের কথা! যদিও তার অভিযোগ মানতে চাননি হরিয়ানার কারামন্ত্রী কৃষ্ণলাল পানওয়ার। তবে গুরমিত আসার পর থেকে জেলের হাল যে বদলেছে, খবর পাওয়া গিয়েছিল আগেই। বন্দিদেরই একাংশ অভিযোগ জানিয়েছিল, বাবার জন্যই ঝামেলা বেড়েছে। রাহুলও বলল, ‘‘আগে তবু আমাদের জন্য সময় মতো জুতো-জামা আসত, এখন তো কিছুই আসে না।’’ সূত্রের খবর, সম্প্রতি এই জাতীয় অভিযোগের জেরে কারা কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছিল আদালত।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন