ট্রাম্পের ঘোষণার বিরুদ্ধে রাশিয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি

  08-12-2017 11:09AM


পিএনএস ডেস্ক: ফিলিস্তিনের জেরুজালেম শহরকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার যে ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিয়েছেন এবার তার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে রাশিয়া।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাইতুল মোকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকটের জন্ম দিয়েছেন।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের সবগুলো প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানায় রাশিয়া। সেইসঙ্গে আরব দেশগুলোর শান্তি পরিকল্পনার প্রতিও রাশিয়ার সমর্থন রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্প বাইতুল মোকাদ্দাসের ব্যাপারে যে ঘোষণা দিয়েছেন তা একটি একতরফা পদক্ষেপ এবং এই ঘোষণা শান্তির পক্ষে যাবে না।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে বাইতুল মোকাদ্দাস বা জেরুজালেম শহরকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের হাতে অধিকৃত শহর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কাজেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি দখলীকৃত শহরকে ইসরাইল নিজের রাজধানী হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না বলে বিশ্বের স্বাধীনচেতা প্রতিটি মানুষ মনে করছেন।

এ ছাড়া, এই শহরে রয়েছে মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা আল-আকসা মসজিদ। ফিলিস্তিনি জনগণ বলছেন, এই শহর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং অন্য কোনো দেশ বা জাতির পক্ষে এর মালিকানা দাবি করার বিন্দুমাত্র অধিকার নেই।

ইহুদীদের কাছে ব্রিটেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ফিলিস্তিনের জমিতে তাদের জন্য একটি রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ করে দিবে। যদিও রোমান সময় থেকে ইহুদিদের ছোট্ট একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী সে জায়গায় বসবাস করতো। ইউরোপে ইহুদীদের প্রতি যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সেটি তাদের একটি নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের ভাবনাকে আরো তরান্বিত করেছে।

১৯৩৩ সালের পর থেকে জার্মানির শাসক হিটলার ইহুদিদের প্রতি কঠোর হতে শুরু করেন। ইতোমধ্যে জাহাজে করে হাজার হাজার ইহুদি অভিবাসী ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে আসতে থাকে। তখন ফিলিস্তিনী আরবরা বুঝতে পারে যে তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ছে। ফিলিস্তিনী আরবরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বিদ্রোহ করে। তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল ব্রিটিশ সৈন্য এবং ইহুদি নাগরিকরা।

কিন্তু আরবদের সে বিদ্রোহ কঠোর হাতে দমন করেছে ব্রিটিশ সৈন্যরা। ফিলিস্তিনদের উপর ব্রিটিশ সৈন্যরা এতো কঠোর দমন-পীড়ন চালিয়েছিল যে আরব সমাজে ভাঙন তৈরি হয়েছিল। ইহুদীরা তাদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনে বদ্ধপরিকর ছিল। ব্রিটেনের সহায়তায় সে অনুযায়ী তারা কাজ এগিয়ে নিচ্ছিল।

১৯৩০ এর দশকের শেষের দিকে ব্রিটেন চেয়েছিল হিটলারের নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অবস্থান জোরালো করতে। সেজন্য আরব এবং ইহুদী- দুপক্ষকেই হাতে রাখতে চেয়েছে ব্রিটেন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন