‘পর্ন ছবি’ ফাঁসের ফাঁদে ভারতের স্কুলগামী মেয়েরা

  18-01-2018 03:22AM

পিএনএস ডেস্ক: ইনস্টাগ্রামে নিজের নগ্ন ছবি ছড়িয়ে পড়েছে- বন্ধুর কাছে এই কথা শোনার পর বাকরুদ্ধ হয়ে যায় ১৮ বছরের মেয়ে স্বাতি। পরে সে জানতে পারে, বয়ফ্রেন্ডকে পাঠানো ছবিগুলোই ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিকমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে।

ভারতের স্কুলগামী এই ছাত্রী বলেছে, ‘আমাকে না জানিয়ে সে অন্য স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওইসব ছবি দেখিয়েছে। সেসব ছেলে পরে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে যৌন সম্পর্ক করতে চেয়েছে। আমার বন্ধুরা বারবার এসব নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকে।’

প্রতিশোধমূলক পর্ন ও অনলাইনে মেয়েদের উত্যক্ত করার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ছে ভারতের স্কুলগুলোতে। এতে হতাশা নেমে এসেছে অনেক শিক্ষার্থীর জীবনে।

রোহান নামের ১৭ বছরের এক তরুণ জানায়, অপমান করার জন্য নিজের প্রাক্তন গার্লফ্রেন্ডের নগ্ন ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়েছে সে। অনেক চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট এডিট করেও সে ছড়িয়েছে, যাতে প্রমাণ করা যায়, মেয়েটি স্বেচ্ছায় তাকে ছবিগুলো পাঠিয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর রোহানের বন্ধুরা তাকে পরিত্যাগ করে। তার মা-বাবাকে স্কুল থেকে সতর্ক করা হয়।

এ ধরনের ঘটনা ভারতের স্কুলগুলোতে অহরহ ঘটে চললেও খুব কমসংখ্যক ভুক্তভোগীই এ ব্যাপারে মুখ খুলছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, এ ধরনের পর্নগ্রাফি প্রথমে ফাঁস হয়, পরে তা স্কুলে ও বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। ভুক্তভোগীরা অন্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেও হয়রানির শিকার হয়। অনলাইনে তাদের উত্যক্ত করা হয়। কখনো কখনো একজন ছাত্রীর জন্য স্কুলে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। গুজবও ছড়ায় অনেক।

নামরিতা নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘মা-বাবারা এ ধরনের পরিস্থিতি বুঝতে চান না। প্রথমেই অভিযোগ যায়, যে নগ্ন ছবি পাঠিয়েছে, তার দিকে।’

এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী লতা জনকি বলেন, ‘তরুণীরা যৌন মেসেজ পাঠানোর বিপদ সম্পর্কে জ্ঞাত। কিন্তু তারা নিজের প্রতি অন্যের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য এই কাজটি করে। যখন তারা দেখে, তাদের বন্ধুরাও একই কাজ করছে, তখন এটা না করা তাদের আত্মসম্মানের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘মেয়েদের প্রায়ই আবেগের ফাঁদে ফেলা হয়। বয়ফ্রেন্ড নেই- ফলে তারা সামাজিক পরিসর থেকে ছিটকে পড়বে, এমন ভয়ে তারা রাজি হয়।’ এ ব্যাপারে মা-বাবাদের সচেতন হওয়া দরকার বলেও মনে করেন এই মনোবিজ্ঞানী।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন