৪৭ বছরের শাসনে যেভাবে ওমানকে পাল্টে দিলেন সুলতান কাবুস

  18-03-2018 12:13PM


পিএনএস ডেস্ক: ওমানের জনপ্রিয় সুলতান চার দশকের বেশি সময় ধরে রাজ্য শাসন করছেন। অন্য সব আরব নৃপতি যত দিন ধরে ক্ষমতায় থাকুন না কেন, তাদের সবাইকে বিদায় নিতে হয়েছে।

এদের মধ্যে ওমানের সুলতান ব্যতিক্রম। তিনি কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ; বাকি সবার চেয়ে বেশি সময় সাফল্যের সঙ্গে রাজত্ব করে চলেছেন।

সুদীর্ঘ রাজত্বকাল
আরব নৃপতিদের মধ্যে ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ সবার থেকে ব্যতিক্রম। মধ্যপ্রাচ্যের অন্য যে কোনো রাজার চেয়ে বেশি দিন রাজত্ব করছেন। তার রাজত্বের ৪৮ বছর চলছে। তিনি ক্ষমতায় আসার আগে শুধু রাজধানী মাস্কাটেই বাঁধানো রাস্তা ছিল। কলের পানি কিংবা বিদ্যুৎও পাওয়া যেত না ওই সময়। আজ ওমানের রাস্তাঘাট দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তগুলো অবধি চলে গেছে। সবচেয়ে দূরের বসতিগুলোতেও স্কুল ও হাসপাতাল আছে। সারা দেশে ২০টির বেশি কলেজ ও ইউনিভার্সিটি স্থাপন করা হয়েছে।

১৯৯৬ সালের নভেম্বর মাসে রাষ্ট্রের মৌলিক বিধি উপস্থাপন করেন ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ। এটিই হলো ওমানের প্রথম লিখিত সংবিধান। এই সংবিধান ইসলামী আইন ও প্রচলিত আইনের কাঠামোয় বিভিন্ন অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এর মাধ্যমে মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে কোনো সরকারি শেয়ার হোল্ডিং সংস্থার কর্মকর্তা হওয়া যাবে না। এর সবচেয়ে বড় সফলতা হলো সুলতানের উত্তরাধিকার আইন বিধিবদ্ধ করা। হরমুজ প্রণালির ওপর ওমানের কৌশলগত অবস্থান নিয়ে নেন ওমানের সুলতান। যা পারস্য উপসাগরের প্রবেশপথে প্রায় ৩৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে ওমান সর্বদা সচেতন থাকে।

ইরাকের সঙ্গে ওমানের সুলতান একটি কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন যখন তারা একই সঙ্গে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় জাতিসংঘ জোটকেও সমর্থন দিচ্ছিলেন। ওমান ওই জোটে সৈন্য পাঠিয়েছিল এবং তাদের দেশকে অস্ত্র ও রসদ সরবরাহের জন্য উন্মুক্ত রেখেছিল। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওমানের মজলিশ আল শূরার জন্য প্রায় ১ লাখ ওমানি নারী ও পুরুষ মিলে দুজন নারীসহ মোট ৮৩ জন প্রার্থী নির্বাচিত করেন।

২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসে সুলতান কাবুস ৪৮ জনকে মজলিশ আল দাউলায় নিযুক্ত করেন। এটা তাদের দেশের রাষ্ট্রীয় পরিষদ। এই পরিষদে পাঁচজন নারী সদস্যও ছিলেন। পরিষদটি ওমানের দ্বিকক্ষীয় প্রতিনিধি পরিষদের উচ্চকক্ষ হিসেবে কাজ করে। ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর মতো নারীদের পিছিয়ে রাখার পক্ষে নন। তার ব্যাপক আধুনিকায়ন প্রকল্পের ফলে দেশটি বাইরের দুনিয়ার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য দেশের সঙ্গে একটি দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ওমানের সুলতানের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য হলো সব মধ্যপ্রাচ্যের দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।

শান্তিপুরে হঠাৎ অশান্তি
খনিজ তেল থেকে আয় কমতে শুরু করায় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পর্যটনশিল্পের পক্ষে তা পূরণ করা সম্ভব হয় না। ওমানের জিডিপির ছয় শতাংশেরও কম আসে পর্যটন থেকে। ওদিকে জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে, বাড়ছে তাদের চাহিদা ও দাবি-দাওয়া। আরবের অন্য রাষ্ট্রগুলোর মতো ওমানেও বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে আর জীবনযাত্রার উন্নতির দাবিতে আন্দোলন করেন। সংস্কার ও দুর্নীতি অবসানের লক্ষ্যে হাজার হাজার ওমানি সালতানাতের বিভিন্ন রাস্তায় নেমে আসেন।

শিল্প কেন্দ্র ও শিল্প বন্দর সোহারে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। সোমবার ১ হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী গুরুত্বপূর্ণ শিল্প কেন্দ্র সোহারের প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিক্ষোভকারীরা সোহার বন্দরের প্রবেশমুখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে স্লোগান দিচ্ছিলেন ‘আমরা সংস্কার চাই’। কিন্তু ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ চমৎকার দক্ষতার সঙ্গে বিক্ষোভ সামাল দেন। সরকার বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর বিক্ষোভ থামে। তবে বিক্ষোভে একজন মানুষের প্রাণহানি বিশেষভাবে শান্তিপ্রিয় বলে পরিচিত রাষ্ট্রটিকে সচকিত করে।

দাঙ্গা পুলিশের হাতে বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি শাখায় এবং একটি হাইপারমার্কেটে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বিক্ষোভকারীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। পরে সরকার এর ক্ষতিপূরণ দেয়। ওমানের সুলতান ৫০ হাজার নতুন কর্মসংস্থানের আদেশ দেন।

ক্ষমতা লাভ ও আন্তর্জাতিক নীতি
একটি সফল অভ্যুত্থানে ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ তার পিতার ক্ষমতাচ্যুতির পর ১৯৭০ সালের ২৩ জুলাই ক্ষমতা লাভ করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, রাষ্ট্রকে আর মাস্কাট ও ওমান নামে ডাকা হবে না। রাষ্ট্রীয় একতার জন্য এর পরিবর্তে রাষ্ট্রের নাম ওমান সালতানাত রাখা হয়। কাবুস সুলতান হওয়ার পর দক্ষিণ ইয়েমেনের সশস্ত্র কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের কারণে সমস্যা দেখা দেয়। ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি, জর্ডানের বাদশাহ হোসাইন বিন তালাল, ব্রিটিশ স্পেশাল ফোর্সেস ও ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় বিদ্রোহীদের পরাজিত করা হয়।

সুলতান কাবুস সরকারিভাবে ওমানের নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখেন। ইরানের সঙ্গে তার স্বাভাবিক সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ওমানের মিত্রতা রয়েছে। পারস্য উপসাগরের আরব রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে ওমানের সঙ্গে সম্পর্ক সবচেয়ে স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ওমান ইরান ও পাশ্চাত্যের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখে। এর ফলে ওমান যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেছে।

সুলতানের উত্তরাধিকারী
সুলতান কাবুসের শাসনের ৪৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে টি-শার্ট থেকে শুরু করে টাইপিন অবধি সর্বত্র তার ছবি দেখতে পাওয়া যাবে। এর আগের বছরগুলোতেও এমনটি দেখা গেছে। বহু দশক ক্ষমতায় থাকার পরও ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ ঠিক আগের মতোই জনপ্রিয়। তবে ৭৫ বছর বয়সী সুলতানের উত্তরাধিকারী নিয়ে চিন্তা মানুষের মনে উঁকিঝুঁকি মারছে। ওমানের সুলতান কাবুস সন্তানহীন হওয়ায় তারপর কে সুলতান হবেন তা পুরোপুরি অজ্ঞাত সবাই। এ নিয়ে জনসাধারণের মনে রয়েছে ব্যাপক প্রশ্ন।

নারী প্রগতি
ওমান সরকার তথা ওমানের সুলতান কাবুস নারী প্রগতিতে উৎসাহী। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ওমানের সুলতান তাদের মেয়েদের ঘরে বন্দী করে রাখার পক্ষপাতী নন। ওমানের মহিলারা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা ও পড়াশোনা করতে পারেন। মজার বিষয় হলো, রাষ্ট্রীয়ভাবে সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরুষ ছাত্রদের জন্য কোটা রাখা রয়েছে। কেননা স্কুল-কলেজে মেয়েরাই সাধারণত ভালো ফলাফল করে থাকে। ফলে ছেলেরাই উল্টো পিছিয়ে পড়ছে।

কর্মক্ষেত্রেও ছেলেদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করে আসছে। তথ্যপ্রযুক্তিতেও ওমানের মেয়েরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই এগিয়ে। তাদের রয়েছে নানা উদ্ভাবনী ক্ষমতা।

ওমানের দ্রুত বিকাশ
সুলতান কাবুস ওমানকে আধুনিকতার দিকে নিয়ে গেছেন দ্রুত গতিতে। ৪৫ বছর আগে ওমান ছিল আরব বিশ্বের সবচেয়ে পেছনে পড়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে একটি। অন্যদিকে বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি প্রগতি করেছে আজ ওমান সেই তালিকার শীর্ষে বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। ২০১০ সালের হিসাব বলছে, ওমানের গড় আয়ু ৭৬ বছর। প্রতি ১০০০ জন লোকের জন্য ২.১ জন ডাক্তার ও ২.১টি হাসপাতালের শয্যা আছে। ওমানে বহু বিদেশি কাজ করেন। এখানকার ৩৫ লাখের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ লোক ওমানি নাগরিক নন, মূলত ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইরান থেকে আসা বিদেশি কর্মী। প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতার হার ২০১০ সালে ছিল ৮৬.৯%।

যা পর্যটকদের টানে
মাস্কাট বন্দরে যেমন একদিকে বড় বড় ক্রুইজশিপ বাঁধা অন্যদিকে তেমন পুরনো আমলের ঢাউস নৌকা দেখা যায়। আরও রয়েছে নানা লাক্সারি হোটেল। আপাতত মাস্কাট বিমানবন্দরকে বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ওমানে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ওমানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ দেশটির উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্বে বিস্তৃত আল হাজর পর্বতমালা। ৩ হাজার ১০ মিটার উঁচু জেবেল শামসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। সোহার ও মাস্কাটের মধ্যবর্তী স্থানে ওমান উপসাগরের উপকূল ধরে রয়েছে বিস্তৃত সৈকত, যেগুলোতে ড্রাইভিং, পানির নিচে ডুব দেওয়া এবং ডলফিন ও কচ্ছপদের সঙ্গে খেলার ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়াও পাখিপ্রিয় মানুষদের জন্যও ওমান জনপ্রিয়। এখানে স্থানীয় প্রায় ৮০ প্রজাতির এবং অতিথি প্রায় আরও ৪০০ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অতিথি পাখিরা নির্দিষ্ট ঋতুতে ওমানে ফিরে আসে। ওমানের মরুভূমির বিশালাকার বালিয়াড়িগুলো ঘুরে দেখতেও অনেকে পছন্দ করেন। ওমানের চুনা পাথরের পাহাড়ি গুহাগুলোও বিখ্যাত।

শিক্ষা-সংস্কৃতিতে উন্নতি
১৯৭০ সালের আগে ওমানে ৩টি স্কুল এবং তাতে ১ হাজারের মতো ছাত্র ছিল। বর্তমান সুলতানের সময় থেকে শিক্ষার বিস্তার ঘটতে থাকে। এখন প্রতি বছর হাজার হাজার তরুণ ওমানি বেরোচ্ছেন স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি থেকে। তাদের অধিকাংশই সরকারি চাকরি করেন। কেননা তারা মনে করেন সরকারি চাকরিতে বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বেশি। ওমানের সাক্ষরতার হার একসময় কম ছিল। যেমন ১৯৯০ সালে ৫৪.৭%, ২০০২ সালে এটি বেড়ে ৭৫% হয়। বর্তমানে ১ হাজারটি স্কুল এবং সেগুলোতে প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী আছে। ওমানের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ‘সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয়’ ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইংরেজি ভাষা ওমানে সবচেয়ে বেশি শেখানো বিদেশি ভাষা। মাধ্যমিক স্তরের পরবর্তী সব লেখাপড়া ইংরেজিতেই হয়। ওমানের বেতার সংস্থার ইংরেজি চ্যানেল আছে। এ ছাড়াও দেশে অনেক ইংরেজি সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। আরবি ছাড়াও ওমানের দক্ষিণাংশে অনেক আধুনিক দক্ষিণী আরবি ভাষা প্রচলিত। এর মধ্যে আছে জিবালি, মেহরি, হার্সুসি এবং হবিয়ত ভাষা। এসব ভাষায় রচিত নানা রকম সাহিত্যকর্ম রয়েছে যা বেশ সমৃদ্ধ।

সুলতানের রাজতন্ত্র
ওমানের রাজনীতি একটি পরম রাজতন্ত্রের কাঠামোতে পরিচালিত হয়। ওমানের সুলতান হলেন একাধারে রাষ্ট্রের প্রধান ও সরকারের প্রধান। ওমানের সুলতানরা বংশানুক্রমে ক্ষমতায় আসেন। বর্তমানে কাবুস সাঈদ আল সাঈদ দেশটির সুলতান এবং তাকে সহায়তা করার জন্য একটি মন্ত্রিসভা আছে।

২০০০ সালের অক্টোবরে প্রায় ২ লাখ ওমানি প্রথমবারের মতো আইনসভার সদস্যদের নির্বাচিত করেন। মোট ৮৩ জন সদস্য নির্বাচিত হন এবং এদের মধ্যে পাঁচজন মহিলা সদস্যও ছিলেন।

ওমানে ক্ষমতার পৃথকীকরণের ব্যবস্থা নেই। সব ক্ষমতা সুলতানের হাতে রয়েছে। সুলতান সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান। এ ছাড়াও তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের মৌলিক আইনসহ সব আইন ১৯৭০ সাল থেকে রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে প্রচলিত হয়ে আসছে। সুলতান বিচারকদের নিয়োগ করেন এবং সাজা রহিত বা হ্রাস করতে পারেন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন