গুহায় যেভাবে বেঁচে ছিল কিশোরেরা

  11-07-2018 10:03PM

পিএনএস ডেস্ক : থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায় আটকা পড়া ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধার করার ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন দুঃসাহসিক উদ্ধারকারীরা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বর্তমানে উদ্ধার হওয়া সবাই হাসপাতালে আছেন। তারা সুস্থ আছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শক টংচাই লর্টভিরৈরতানপং বলেন, গুহায় কাটানো সময়ের মধ্যে প্রত্যেকের গড়ে দুই কেজি (৪.৪ পাউন্ড) করে ওজন কমেছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো।

ওই কিশোর ফুটবলারদের কোচের প্রশংসা করেছেন টংচাই লর্টভিরৈরতানপং। কোচ এক্কাপোল জানথাওং একসময় সন্ন্যাসী ছিলেন। গুহায় আটকা পড়ার পর থেকে তিনি তাঁর শিষ্যদের মানসিক সাহস ও শক্তি সঞ্চার করে আগলে রেখেছেন। এ জন্য কোচের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন টংচাই লর্টভিরৈরতানপং। তিনি বলেন, নিখোঁজের পর থেকে সন্ধানের আগ পর্যন্ত নয় দিন গুহার মধ্যে তারা কোনো খাবার খায়নি। শুধু পানি পান করে তারা নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেছিল।

নিখোঁজের নয় দিন পর তাদের সন্ধান পাওয়া গেলে ডুবুরিরা তাদের খাবার সরবরাহ করে। এরপর থেকে তাঁরা উদ্ধারকারী দলের সরবরাহ করা খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন চকলেটের সঙ্গে রুটি খাওয়া ইচ্ছের কথা জানিয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাদের দুধের মতো প্রোটিন ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দেওয়া হচ্ছে।

গত রোববার প্রথম দফায় চার কিশোরকে অন্ধকার গুহা থেকে উদ্ধার করে আনা হয়। ওই কিশোরদের অভিভাবক ও আত্মীয়স্বজনদের সরাসরি দেখার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে কাচের দেয়ালের বাইরে থেকে তাঁরা তাঁদের সন্তানদের দেখার এবং টেলিফোনে কথা বলা সুযোগ পেয়েছেন। শিগগিরই তাঁদের সরাসরি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হবে। সে ক্ষেত্রে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে প্রতিরক্ষামূলক কাপড় পরেই কিশোরদের কাছে যেতে হবে।

গত ২৩ জুন থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় চিয়াং রাই এলাকার থাম লুয়াং গুহায় বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয় ১২ খুদে ফুটবলার ও তাদের কোচ। ১২ কিশোরের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। তাদের সহকারী কোচ এক্কাপোল জানথাওংয়ের বয়স ২৫ বছর।

তারা ওয়াইল্ড বিয়ার্স বা মু পা নামের একটি ফুটবল দলের সদস্য। নয় দিন গুহার ভেতরে আটকে থাকার পর গত ২ জুলাই ব্রিটিশ ডুবুরি রিচার্ড স্ট্যানটন ও জন ভলানথেন তাদের সন্ধান পান। অবস্থান জানার পর ১২ কিশোর ও তাদের কোচের জন্য গুহার ভেতরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করার পাশাপাশি পাঠানো হয় খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জাম। তবে গত বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরদের কাছে অক্সিজেনের সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে প্রাণ হারান থাই নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি সামান কুনান।

৭ জুলাই অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক গুহায় ঢুকে কোচ ও কিশোরদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে উদ্ধার অভিযান শুরুর সবুজসংকেত দেন। তাদের অবস্থানস্থলে যাওয়ার জন্য ওই পাহাড়ে শতাধিক গর্ত করা হয়। তবে সেখানে কিশোরদের না পেয়ে আগের পরিকল্পনামতো ডুবসাঁতার দিয়ে তাদের উদ্ধারে চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয় ৮ জুলাই। রোববার প্রথম দিন চারজন ও সোমবার দ্বিতীয় দিন চারজন আর মঙ্গলবার চার কিশোরসহ তাদের কোচকে উদ্ধার করা হয়।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন