ইসরাইলি বর্বর হামলায় গাজা উপত্যকা এখন মরুভূমি

  16-11-2018 03:56PM


পিএনএস ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরাইলের ব্যাপক বোমা হামলা করার মধ্য দিয়ে ইসরাইল এবং গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের মধ্যকার আরেকটি যুদ্ধ শুরু হওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এদিকে হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিকদের হামাসের রকেট হামলা থেকে বাঁচানোর জন্য আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ইসরাইলি বিমান হামলায় হামাস কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আল-আকসা টিভি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজা শহরে অবস্থিত আল-আকসা টিভি ভবনের পাশের ভবনে বসবাস করা আবু আয়মান লেমজেনি বলেন, ‘এটি অনেকটা ভূমিকম্পের মত মনে হয়েছে। আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন যে, এখানে পূর্ব থেকে থাকা দোকান পাট, ঔষধের দোকান, সরকারি দপ্তর, এমনকি বড় বড় বিল্ডিংগুলোর অস্তিত্ব শেষ হয়ে গেছে।’

গাজার অধিবাসী জামাল মর্তুজা বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আছে। গত রাতে আমরা এক মুহূর্তের জন্যও ঘুমাতে পারি নি।’

সুরক্ষিত আশ্রয় কেন্দ্রের অভাবে অনেকেই তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে খোলা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। গাজার আরেক অধিবাসী মোহাম্মদ আবুউদ বলেন, ‘যখনই আমরা আকাশে মিসাইল দেখতে পেয়েছিলাম, আমরা তড়িঘড়ি করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছি। আমরা সাধারণ নাগরিক। আমাদের কাছে কোনো ধরনের বন্দুক বা রকেট নেই।’

এদিকে ইসরাইলের সমুদ্র নিকটবর্তী শহর আসকেলোনের ১২৮,০০০ অধিবাসী হামাস কর্তৃক নিক্ষেপিত মহুর্মুহু রকেট হামলার মধ্য দিয়ে তাদের রাত কাটিয়েছেন।

ইসরাইলের নাগরিক তিন সন্তানের জনক মেইর ইদরি তার পরিবারসহ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েরা ট্রমায় আক্রান্ত হয়েছি, এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’

ইদরি বলেন, ‘আমরা সরকারের নিকটে আমাদের সন্তানদের সঠিক এবং নিরাপদভাবে বড় করার নিশ্চয়তা চেয়েছি। এটি আমাদের খুবই প্রয়োজনীয় একটি নাগরিক অধিকার।’

তবে মেইরি ইদরি ছাড়াও ইসরাইলের অন্যান্য নাগরিকরা ‘হামাস ধ্বংস হোক’ এই বার্তা বয়ে বেড়ান। গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামি এই দলের সাথে ইসরাইল ২০০৮ সাল থেকে অন্তত তিনটি বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়েছে।

হামাস এবং ইসরাইলের মধ্যকার ২০১৪ সালের যুদ্ধে গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ বিল্ডিং ধ্বংস প্রাপ্ত হয় এবং এগুলোর অধিকাংশই এখনো পর্যন্ত পুনঃনির্মাণ করা হয় নি।

চলতি মাসের ১৩ তারিখ মঙ্গলবার সকালে ইসরাইলি হামলায় গাজা শহরের ব্যস্ততম রাস্তাঘাটগুলো একেবারে মরুভূমি সদৃশ হয়ে যায়। গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে বসবাস করা মোহাম্মদ বুলবুল জানান, ‘আমরা ২০১৪ সালের যুদ্ধ এখনো ভুলতে পারিনি। জনগণ যুদ্ধ দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। যথেষ্ট হয়েছে।’ সূত্র: আরব নিউজ ডট কম

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন