এবার সুর নরম করে পাকিস্তানকে আলোচনার বার্তা দিল মোদি!

  21-02-2019 11:47AM

পিএনএস ডেস্ক:সুর কিছুটা নরম করে ইসলামাবাদকে ফের আলোচনার বার্তাই দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মোদির বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সামগ্রিক আলোচনা যেখানে শুরু হতে পারে, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সে রকম পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপোরায় সিআরপি কনভয়ে জঙ্গি হামলার পরেই পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, আলোচনার পাট শেষ।

পুলওয়ামার হামলার পরে জইশ-ই-মহম্মদ নেতা মৌলানা মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের জঙ্গি তালিকায় আনার দাবি জোরদার হয়ে ওঠার আবহে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন সালমান। সেখানে পাকিস্তান-সৌদি যৌথ ঘোষণাপত্রে ছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের জঙ্গি তালিকা নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ। আজ সেই ঘোষণাপত্রের উল্টো পথে হেঁটেছেন সালমান।

সৌদি-ভারত বিবৃতি বলছে, জঙ্গির পাশাপাশি জঙ্গি সংগঠনকেও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ তালিকায় আনার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। সীমান্তপারের সন্ত্রাস রোখা, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির আর্থিক সাহায্য বন্ধ করা সবই রয়েছে বিবৃতিতে।

জানা যায়, পুলওয়ামা-পরবর্তী পরিস্থতি সামলাতে কূটনৈতিক পথেই জোর দিচ্ছে দিল্লি। সৌদি আরব পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাই সে দেশের নেতৃত্বকে পাশে রেখে বার্তা দেওয়া হয়েছে ইসলামাবাদকে।

বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের মে থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে মোদি যে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন, তার প্রশংসা করেছেন সালমান। কিন্তু ঘটনা হল, ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে তৃতীয় রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না এটাই ছিল এত দিন সাউথ ব্লকের অবস্থান। সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তান প্রসঙ্গ রেখে সেই অবস্থান থেকে সরে এল নরেন্দ্র মোদির সরকার।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের নাম করেননি সালমান। কিন্তু সূত্রের খবর, বৈঠকে পুলওয়ামার হামলা এবং পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের স্বর্গোদ্যান গড়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ও প্রমাণ তার সামনে হাজির করেছে দিল্লি।

সৌদি যুবরাজের কথায়, আমাদের দু’দেশের একটি সাধারণ উদ্বেগ হল সন্ত্রাসবাদ এবং মৌলবাদ। ভারত এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমরা সহযোগিতা করব, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ থাকে। এ ব্যাপারে ভারতের ভূমিকাকে আমরা সমর্থন করি।

তিনি জানান, সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো ধ্বংস করা এবং জঙ্গি সংগঠনগুলির অর্থের জোগান বন্ধ করতে দু’দেশের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় হবে। খুব শিগগিরিই শুরু হবে যৌথ নৌ-মহড়াও।

পাকিস্তানের নাম না-করে মোদিও বলেন, যে সব দেশ সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে, তাদের উপরে চাপ তৈরি করা হবে। যুবশক্তি যাতে বন্দুক হাতে না-তোলে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

যৌথ বিবৃতি আরও বলছে, ভারত এবং সৌদি আরব সন্ত্রাসকে কোনও বিশেষ জাতি বা সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত করার বিরোধী।

বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালেই একটি শান্তি পুরস্কার নিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোল রওনা হচ্ছেন মোদি। তার আগে পাকিস্তানকে ঘুরপথে আলোচনার বার্তা দেওয়াটা তাৎপর্যপূর্ণ মনে হচ্ছে কূটনীতিকদের। গত কয়েক দিন ধরেই দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তাপ না-বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছিল আমেরিকা। আফগানিস্তান ছেড়ে বেরোনোর সময়ে ভারত-পাক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি যথেষ্ট অসুবিধাজনক ওয়াশিংটনের পক্ষে। আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আলোচনার মাধ্যমে ভারত-পাক সমস্যা মেটানোর কথা বলেছেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন