পাকিস্তানের নিষেধাজ্ঞায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে ভারত

  19-03-2019 02:21PM


পিএনএস ডেস্ক: কাশ্মিরের পুলওয়ামার আত্মঘাতী হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত। এর পরপরই ভারতের জন্য নিজেদের আকাশপথ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পাকিস্তান। এর ফলে ভারতের বিমান কোম্পানিগুলোকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ফ্লাইটও বাতিল করতে হচ্ছে।

জানা গেছে, পাকিস্তানের নিষেধাজ্ঞার কারণে মূল সমস্যা হয়েছে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাগামী ফ্লাইটগুলোর ক্ষেত্রে। কারণ পশ্চিমা ওই সব দেশে যেতে ভারতের বিমানগুলোকে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। তাতে সময়ও যেমন বেশি লাগছে এবং তেমনি খরচও বেড়েছে। ভারত থেকে যে সব ফ্লাইট ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক ও শিকাগো যাচ্ছে সেগুলোকে গুজরাট হয়ে আরব সাগর পেরিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে হচ্ছে।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গত মাসের ২৭ তারিখে পাকিস্তান তাদের আকাশপথ ব্যবহারে ভারতের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর পর থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে তাদের ক্ষতি ৬০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে।

এয়ার ইন্ডিয়া জানায়, বেশি দূরত্বের রুটগুলোর ক্ষেত্রে বিমানগুলোকে জ্বালানি ভরার জন্য মাঝে অন্তত একবার অবতরণের প্রয়োজন হয়। পাকিস্তানের আকাশ ব্যবহার করতে না পারার কারণে জ্বালানি ভরার জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার আমেরিকা ও ইউরোপগামী বিমানগুলোকে শারজা অথবা ভিয়েনায় অবতরণ করাতে হচ্ছে। এতে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। কিছু রুটে তারা ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে আমেরিকা ও ইউরোপগামী বিমানগুলোর পথ ঘুরিয়ে দেয়ার কারণে যাত্রীরাও সমস্যার মুখে পড়ছেন। আমেরিকা যাওয়ার জন্য সাধারণত বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর এবং বোয়িং ৭৭৭-২০০এলআর বিমান ব্যবহার করে এয়ার ইন্ডিয়া। জ্বালানি ভরার জন্য মাঝে অবতরণ এবং অনেকটা পথ ঘুরে যাওয়ার জন্য আমেরিকা পৌঁছতে এসব বিমানে নির্ধারিত সময়ের থেকে ৪ ঘণ্টা বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে এসব রুট ব্যবহারকারী যাত্রীদের।

আবার এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮০০ ড্রিমলাইনার পরিচালনা করতো ইউরোপীয় যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে। কিন্তু পাকিস্তানের ওই নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাটি। কারণ ফ্লাইটের সময় বেড়ে যাওয়ায় সংস্থাটিকে এখন অতিরিক্ত পাইলট-ক্রুর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ফলে আপাতত তারা বার্মিংহাম ও মাদ্রিদের ফ্লাইটগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপের অন্য দেশেও পৌঁছতে আগের চেয়ে দুই ঘণ্টা বেশি সময় লাগছে।

১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৪ সদস্য নিহত হয়। স্বাধীনতাকামী সংগঠন জয়েশ-ই মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। নয়াদিল্লি এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ হামলায় তাদের কোনো হাত নেই। ভারতের কাছে যদি এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে সেটি পাকিস্তানের কাছে দেয়া হোক, পাকিস্তান এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

দুই দেশের উত্তেজনার এক পর্যায়ে ভারত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে হামলা চালায়। পাকিস্তান পরের দিন ভারতে গিয়ে হামলা করে। এতে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেলেও পাকিস্তানের মাটিতে ধৃত ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে মুক্তি দিলে উত্তেজনা অনেকটাই কমে আসে। সূত্র : এনডিটিভি

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন