ভারতে হিন্দুত্ববাদী নেতা খুন, গ্রেফতার ৫

  19-10-2019 08:14PM

পিএনএস ডেস্ক : ভারতের লখনৌতে শুক্রবার নিজ বাড়ির সামনেই খুন হয়েছেন কমলেশ তিওয়ারি নামে একজন হিন্দুত্ববাদী নেতা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনিবার ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে লখনৌ পুলিশ। এর আগে খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করে কমলেশ তিওয়ারির বাড়ির বাইরে থেকে। ফুটেজে দু'জন পুরুষ এবং এক মহিলা সহ তিন সন্দেহভাজনের ছবি ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া দুইজন সন্দেহভাজন এখনও পুলিশের নাগালের বাইরে রয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি ওপি সিং জানিয়েছেন, লখনৌ ও গুজরাট পুলিশ বাহিনীর যৌথ অভিযানে গুজরাট থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া দুজন মুসলিম ধর্মগুরুকে গ্রেফতার করা হয়েছে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর জেলা থেকে। ধর্মগুরু দুজনের নামে আগেই মৃত কমলেশ তিওয়ারীর স্ত্রী এফআইআর করে রেখেছিলেন। অপর দুই অভিযুক্ত, যারা এই হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, তারা এখনও পলাতক আছেন।

উদ্ধারকৃত সিসিটিভি ফুটেজটিতে দেখা যায়, দুইজন পুরুষ ও একজন মহিলা একটি হলুদ ব্যাগে করে মিষ্টির বাক্স নিয়ে আসছেন। পুলিশের প্রাথমিক ধারণামতে, ওই মিষ্টির বাক্সের মধ্যেই লুকানো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল হিন্দুত্ববাদী নেতা কমলেশ তিওয়ারিকে। ওই সন্দেহভাজনরা তিওয়ারির বাড়িতে দীপাবলির উপহার দেওয়ার অযুহাতে প্রবেশ করে। পুরুষদের মধ্যে একজন জাফরান রঙের কুর্তা, অন্যজন লাল রঙের পোশাক পরেছিলেন এবং মহিলাটি লাল কুর্তা এবং সাদা দুপট্টা পরেছিলেন বলে ফুটেজে দেখা গেছে। ফুটেজে আরও দেখা গেছে, ওই মিষ্টির বাক্সটি গুজরাটের সুরাট থেকে আনা হয়েছে। এই বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।

এদিকে নিহত নেতার স্ত্রী কিরণ তিওয়ারি, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দেখা করার দাবি জানিয়েছেন । পাশাপাশি তিওয়ারির ছেলেদের জন্য সরকারি চাকরির দাবিও করেন তিনি। এ ব্যাপারে সরাসরি আত্মহত্যার হুমকি জানিয়ে কিরণ গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমি আমার বাচ্চাদের নিয়ে এই জায়গায় আত্মহত্যা করব।' তিনি আরও জানান, তার স্বামী প্রতিদিন হুমকি ফোন কল পেতেন কিন্তু সরকার সময় মতো তাকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়াতেই এই ঘটনা ঘটেছে।

কমলেশ তিওয়ারি (৪৩) শুক্রবার বিকেলে লখনৌয়ের নাকা অঞ্চলে নিজের বাড়ির সামনে নিহত হন। তার গলা কেটে দেয়া হয় এবং একাধিকবার তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় । তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। হত্যাকাণ্ডের দিন ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ।

২০১৭ সালে হিন্দু সমাজ পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই নেতা। তার নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় থানা থেকে দুইজন বন্দুকধারী এবং একজন গার্ড নিয়োগ করা হয়েছিল। তবে হত্যার দিন, বন্দুকধারীরা অনুপস্থিত ছিলেন। পুলিশ বলছে, তার বাসভবনের প্রহরী সন্দেহভাজনদের গেটে থামিয়েছিল। কিন্তু তিওয়ারির কথা মতো তাদের তল্লাশি না করেই বাড়ির ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেয় প্রহরী। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, এর থেকেই স্পষ্ট যে সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা কমলেশ তিওয়ারির পরিচিত ছিলেন।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন