ব্রিটিশ ভোটে রুশ হস্তক্ষেপ! সরব হিলারি ক্লিনটন

  13-11-2019 09:49AM


পিএনএস ডেস্ক: ব্রেক্সিটপন্থী সব দৈনিকের প্রথম পাতায় আজ ছিল একটাই ছবি। বিয়ারের গ্লাস হাতে বরিস জনসন, ক্যাপশন: ‘চিয়ার্স’ (উল্লাস)। এই উল্লাস প্রকৃতপক্ষে ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজের জন্য। কারণ গতকাল ফারাজ জানিয়েছেন, কনজারভেটিভ এমপি'দের হাতে থাকা কোনও আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না তার দল। এই ‘বোনাস’ পেয়ে যারপরনাই খুশি কনজারভেটিভ নেতা তথা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

তবে এরই মধ্যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটন আবার আজ বলেছেন, এবারের ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্রিটেনের রাজনীতিতে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করছে না বরিসের সরকার। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং এর কোনও ব্যাখ্যা হয় না। একটি ব্রিটিশ চ্যানেলে হিলারি বলেছেন, এ দেশে যারা ভোট দিচ্ছেন, তাদের প্রত্যেকের ভোটের আগে ওই রিপোর্ট দেখা উচিত।

ব্রিটেনের গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গণভোট এবং ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচন প্রভাবিত করতে রুশ হস্তক্ষেপের প্রমাণ রয়েছে ওই সব রিপোর্টে। রিপোর্টটি চূড়ান্ত হয় গত মার্চ মাসে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে সেটি পাঠানো হয় ১৭ অক্টোবর। ১০ ডাউনিং স্ট্রিট বলছে, কোনও রিপোর্ট চেপে দেয়নি তারা। বিরোধী লেবার পার্টি আবার দাবি করেছে, সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বড় ধরনের সাইবার হানা রুখতে সমর্থ্য হয়েছে তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছু দিন আগে এক রেডিও চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে বরিসকে বার্তা দিয়েছিলেন, নাইজেলের সঙ্গে মিলে লড়লে আখেরে লাভ হবে। তারপরেও অবশ্য নাইজেল-বরিসের মধ্যে মিমাংসা হয়নি। সপ্তাহ খানেক আগেও নাইজেল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বরিসের ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে তার আপত্তি রয়েছে। আর তাই ৫৫০টি আসনেই তার দল ব্রেক্সিট পার্টি প্রার্থী দেবে। তার পরে হঠাৎই কনজারভেটিভদের জন্য আসন ছেড়ে দেয়া কেন?

সংবাদ মাধ্যমে ফারাজ বলেছেন, বরিস তাকে বুঝিয়েছেন ব্রেক্সিট চুক্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে (উইথড্রয়াল এগ্রিমেন্ট) আর কোনও মেয়াদ বৃদ্ধি হবে না। প্রতিশ্রুতি মত ইইউ-এর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির জন্য ব্রিটেনের হাতে সময় আছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফারাজের মতে, ইইউ ছাড়ার পক্ষপাতি যারা, তাদের একসঙ্গেই এগোনো উচিত।

বিরোধী লেবার পার্টি অবশ্য এ সব দেখে শুনে জানিয়েছে- মনে হচ্ছে নাইজেল ফারাজ এবং বরিস জনসন মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশ পালন করছেন! তবে কনজারভেটিভ পার্টির দাবি, নাইজেল ফারাজের পার্টির সঙ্গে তাদের কোনও চুক্তি হয়নি। ফারাজও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বন্ধু’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা শোনার পরে তিনি মত পরিবর্তন করেছেন, এমনটা একেবারেই নয়।

নাইজেলের পক্ষে পাশে থাকার আশ্বাস পেলেও পুরোপুরি স্বস্তি নেই কনজারভেটিভ দলের অন্দরে। লেবারদের ঘাঁটি এবং যে ৩০০ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে, সেই সব আসনে প্রার্থী দিচ্ছে নাইজেলের ব্রেক্সিট পার্টি। ফলে সেখানে ভোট কনজারভেটিভ, ব্রেক্সিট পার্টি ও লেবার, অন্তত তিনটি দিকে ভাগ হয়ে যাবে। এবং যার ফলে লাভ হতে পারে লেবারদেরই।

নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পার্লামেন্ট দখল করতে চাইলে কনজারভেটিভ দলকে এই আসনগুলোর অধিকাংশই পেতে হবে। লেবার পার্টির মধ্যে যে সব শ্রমিক শ্রেণির ভোটার রয়েছেন, তারা নীতিগত ভাবে কনজারভেটিভ পার্টিকে ভোট দেয়ার পক্ষপাতী নন। বরং ইইউ ছাড়তে চায় বলে তারা ব্রেক্সিট পার্টিকে ভোট দিতে আগ্রহী হতে পারেন। -আনন্দবাজার

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন