দিল্লির দাঙ্গায় ৮০ মুসলিমকে বাঁচিয়েছেন মাহিন্দর

  29-02-2020 08:21AM

পিএনএস ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনকে (এনআরসি) কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরে চলা সাম্প্রদায়িক অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০০ শতাধিক।

উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলায় শত শত মুসলিম তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। পুড়িয়ে ভস্ম করে দেয়া হয়েছে দোকানপাট। যে যার মতো লুটপাট করেছে। রক্তক্ষয়ী এ হামলার পর অনেক মুসলিম পরিবার নিঃস্ব। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।

‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিয়ে যখন উগ্রপন্থীরা মুসলমানদের ওপর হামলে পড়েছে, তখন হিন্দুদেরই কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। এমনই একটি ঘটনার কথা শোনা গেল উত্তর-পূর্ব দিল্লির গোকুলপুরীর বাসিন্দাদের মুখে।

সেখানকার এক বাসিন্দা মাহিন্দর ও তার ছেলে ইন্দ্রজিৎ সিং প্রায় ৮০ জন মুসলিম প্রতিবেশীর প্রাণ বাঁচিয়ে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিয়েছেন। বিষয়টি শোনার পরেই সবাই প্রশংসা করছে তাদের। এলাকায় রীতিমতো ‘নায়কের’ সম্মান পাচ্ছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, গোকুলপুরী এলাকার বাসিন্দা ৫৩ বছর বয়সী মাহিন্দরের বাড়ির কাছে একটি ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্রের দোকান আছে। ওই দোকানই তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের জীবিকার একমাত্র ভরসা। ২৪ ফেব্রুয়ারি অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোলকপুরী এলাকায়।

হিন্দু অধ্যুষিত ওই এলাকায় বসবাসকারী মুসলিমদের বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালাচ্ছে বলে খবর পান মাহিন্দর। সঙ্গে সঙ্গে ছেলে ইন্দ্রজিৎকে ডেকে নিয়ে স্থানীয় মুসলিমদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যান। তারপর ছেলের বুলেট মোটরসাইকেল ও নিজের স্কুটিতে করে ৬০ থেকে ৮০ জন মুসলিম প্রতিবেশীকে গোকুলপুরী থেকে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা করদমপুরে নিরাপদ আশ্রয়ে ছেড়ে নামিয়ে দিয়ে আসেন। মাহিন্দর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ১৯৮৪ সালে দিল্লিতে হওয়া শিখ নিধন যজ্ঞের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল আমার। তাই হিন্দু বা মুসলিম কিছু দেখেনি। আমার চোখে শুধু মানুষ ভাসছিল। শুধু ছোট ছোট শিশুর মুখ চোখে পড়ছিল। এই সব দেখে আমার মনে হয়, এরা সবাই আমার সন্তান। এদের কোনো ক্ষতি হতে দেব না আমি। মানবিকতার তাগিদেই প্রয়োজনের সময় তাদের সাহায্য করেছি আমরা। এছাড়া আর কী বা বলতে পারি?’

সূত্র : সংবাদপ্রতিদিন

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন