তিনটি এলাকা থেকে সেনা সরাল চীন

  10-07-2020 08:07AM


পিএনএস ডেস্ক: সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার শর্ত মেনে পূর্ব লাদাখের তিনটি এলাকায় বৃহস্পতিবার চীনা সেনাবাহিনী পিছু হটার প্রথম পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএএসি) অন্য কিছু অংশে টানাপড়েন চলছে এখনও। পিপলস লিবারেশন আর্মি প্রথম দফার সমঝোতার শর্ত মেনে পূর্ব লাদাখের তিনটি এলাকা থেকে সরলেও তাই পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারত।

লাদাখের চুসুল সীমান্ত লাগোয়া মল্ডোতে গত ৩০ জুন কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।

সেনা সূত্রের খবর, সেই আলোচনার ফলশ্রুতি হিসেবে ২ জুলাই থেকে সেনা সমাবেশ কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর পরে ৫ জুলাই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ইর বৈঠকে লাদাখে পর্যায়ক্রমে ডিসএনগেজমেন্ট এবং ডিএসক্যালেশনের বিষয়ে খুঁটিনাটি স্থির হয়।

গালওয়ান উপত্যকার ১৫ জুনের সংঘর্ষস্থল পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪ থেকে পিপলস লিবারেশন আর্মির পিছু হটার ‘প্রমাণ’ উপগ্রহ চিত্রে মিলেছে ইতিমধ্যেই। অদূরের পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫ (হট স্প্রিং) এবং গোগরার পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৭এ থেকেও কিছুটা পিছনে সরেছে তারা।

সেনার একটি সূত্রে খবর, ৩০ জুনের পরে ওই তিন এলাকা থেকে পাঁচটি ছাউনি সরিয়েছে চীনা সৈন্য। কিন্তু তাদের বেশ কিছু নির্মাণ ও ছাউনি এখনও রয়েছে। ফলে পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা। তবে আপাতত ওই তিন এলাকায় লালফৌজের সমাবেশ এলএসি-র ওপারে রয়েছে বলেই এদিন উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে।

মে মাসে এলএসি পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে গালওয়ান নদীখাতের উপর পাথর ভেঙে রাস্তা বানিয়েছিল চীন। আর্থ মুভার এনে নদীর উপর বানানো হয় কালভার্ট। সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘‘দ্রুত সামরিক যানবাহন যাতায়াতের উদ্দেশ্যে ওই চিনা ফৌজ ও রাস্তায় অ্যাসফল্টের প্রলেপ দিয়েছে। ওদের আনা কিছু ছাউনিও রয়ে গিয়েছে। সেগুলো থেকে গেলে বুঝতে হবে, পিছু হটা নয় বরং শীতের সময় পাকাপাকি ভাবে ওখানে ঘাঁটি গেড়ে বসার মতলব রয়েছে ওদের।’’

প্যাংগং লেকের উত্তরের ফিঙ্গার এরিয়া-৮-এর তিনটি পয়েন্ট থেকে চীন সেনা কিছুটা পিছিয়েছে। কিন্তু ফিঙ্গার এরিয়া ৫ থেকে ৮ এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে বাঙ্কার, পিলবক্স, নজরদারি টাওয়ার বানিয়েছে তারা। অথচ মে মাসের আগে ওই এলাকাগুলিতে নিয়মিত টহল দিত ভারতীয় সেনা। দৌলত বেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটির অদূরে দেপসাং এলাকায় ঢুকে আসা লালফৌজ ভারতীয় সেনার এলএসি বরাবর টহলদারিতে বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ।

এলএসি-তে উত্তেজনা কমানোর উদ্দেশ্যে চলতি সপ্তাহেই দু’দেশের ‘ওয়ার্কিং মেকানিজম অন কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড কনসাল্টেশন’ বৈঠক হওয়ার কথা। পরবর্তী পর্যায়ে ফের হবে সামরিক স্তরের আলোচনা। সেখানে দ্বিতীয় পর্যায়ের ডিসএনগেজমেন্ট এবং ডিএসক্যালেশন নিয়ে আলোচনায় ভারতের তরফে বিষয়গুলো তোলা হতে পারে। তবে সব মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়া অনেকটাই সময়সাপেক্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন