ইরানি বিজ্ঞানী হত্যা: ট্রাম্পের ক্ষমতা ছাড়ার আগে নতুন দ্বন্দ্বের শঙ্কা

  28-11-2020 04:26PM

পিএনএস ডেস্ক : পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদেহ হত্যাকাণ্ডে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা ছাড়ার শেষ মুহূর্তে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দ্বন্দ্ব দেখা যেতে পারে।

এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শুক্রবার তেহরানের কাছে দামাভান্দ কাউন্টির আবসার্ড এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ফখরিযাদেহ। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মারা যান।

ফখরিযাদেহকে হত্যার জন্য ইতিমধ্যে ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক বক্তব্যে উঠে এসেছিল ফখরিযাদেহর নাম। তাকে হত্যাকাণ্ডে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আশীর্বাদ ছিল বলেও ইঙ্গিত দেয় ইরান।

রুহানি বলেন, ‘আবারও একবার দখলদার ইহুদিদের ভাড়াটে খুনিদের রক্তাক্ত হাতের সঙ্গে শয়তানি হাত মেলাল বৈশ্বিক ঔদ্ধত্য শক্তি।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সামরিক উপদেষ্টা হোসেইন দেঘান বলেন, ‘এই হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের ওপর বজ্রের মতো আঘাত হানা হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইহুদিবাদীরা তাদের রাজনৈতিক মিত্রের (ট্রাম্প) শেষ দিনগুলোতে ইরানকে আরও চাপে ফেলতে চায় এবং পুরোপুরি যুদ্ধ লাগিয়ে দিতে চায়।’

পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পের ক্ষমতার শেষ মুহূর্তে এমন হুমকি আসল ইরানের পক্ষ থেকে।

রয়টার্স জানাচ্ছে, ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যায় সবার সঙ্গে বৈরিতা অবসানে বারাক ওবামা প্রশাসনের নীতিতে ফেরত যাওয়া কঠিন হবে বাইডেনের জন্য।

নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারিয়ে জানুয়ারিতে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন জো বাইডেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত চার বছর ইরানের ওপর খড়গহস্ত ছিলেন। তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার সময়ে করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন এবং ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকেন। ইতিমধ্যে বিদায়ী মার্কিন প্রশাসন দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দ্বিগুণ করেছে।

বাইডেন সে অবস্থান থেকে সরে আসার অঙ্গীকার করেন। ইরানও ঘোষণা দেয়, কোনো আলোচনা ও শর্ত ছাড়াই দেশটি নিজ থেকেই পরমাণু চুক্তির অঙ্গীকারে ফিরে আসবে।

কিন্তু ফখরিযাদেহ হত্যার ঘটনায় শুরুতেই বাইডেন প্রশাসন নতুন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

টেলিগ্রাম ম্যাসেজিং অ্যাপে পাওয়া বার্তা থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গে ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা কমিটি, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল একটি বৈঠক ডেকেছে।

ফখরিযাদেহ ছিলেন সর্বাধিক খ্যাতিমান ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী এবং অভিজাত ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোরের সিনিয়র অফিসার। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা তাকে ‘ইরানি বোমার জনক’ হিসেবে অভিহিত করতেন।

এ মাসেই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ইরানে হামলা চালানোর পথ খুঁজছিলেন ট্রাম্প। যদিও তার উপদেষ্টারা এতে সায় দেননি।

পরবর্তীতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে এক বৈঠকে যোগ দেন নেতানিয়াহু, সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান।

এ বৈঠকের কয়েকদিন পর ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ড ঘটল। এর আগে জানুয়ারিতে বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র।

পিএনএস/এসআইআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন