দীর্ঘ হচ্ছে মিয়ানমার থেকে ভারতে পালানো মানুষের সারি

  10-04-2021 12:08PM


পিএনএস ডেস্ক: গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ক্ষমতা দখল করে নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী। গ্রেফতার করা হয় ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে।

এরপর সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে দেশটির জনগণ। দমন-নিপীড়ন শুরু করে সামরিক বাহিনী। এমনকি গুলি করে পাখির মত মানুষ হত্যা শুরু করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।

সামরিক সরকারের দমনপীড়নের ফলে মিয়ানমার থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে যেতে থাকে দেশটির নাগরিকরা। দিন দিন ভারতে পালানো মানুষের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর বহু লোক ভারতে ঢুকে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চাইছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এসব কথা বলা হয়েছে।

তৃতীয়বারের চেষ্টায় ভারতে ঢুকেছেন ৪২ বছর বয়সী মিয়ানমারের নারী মাখাই (ছদ্মনাম)। ঘরবাড়ি ছেড়ে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে কাদাপানি মাড়িয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুরে ঢুকেছেন তিনি। মণিপুর সীমান্তবর্তী তামু জেলায় বাড়ি মাখাইয়ের।

মেয়ে ও বোনদের নিয়ে দেশ ছাড়া হওয়া মাখাই বিবিসিকে বলেন, ‘নিজেদের রক্ষায় এ ছাড়া আর কোনও পথ খোলা ছিল না আমাদের সামনে। এবার আসতে পেরেছি। কিছুদিন গেলে হয়তো কোনো সুযোগই থাকতো না।’

মাখাই বিবিসিকে আরও বলেন, ‘সেনারা বাড়িঘর তছনছ করে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষজনকে হত্যা করছে, ধর্ষণ করছে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে বহু রাত সেনা অভিযানে ভয়ে আমাদেরকে জঙ্গলে কাটাতে হয়েছে।’

মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে মণিপুর রাজ্যের মোরেহ শহরের সরকারি একটি হাসপাতালে আসা দুই তরণের সঙ্গে কথা হয় বিবিসি প্রতিবেদকের। তারা জানান, সুস্থ হয়েই যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরতে চান।

মণিপুর রাজ্য সরকার সম্প্রতি বলেছে, মিয়ানমার থেকে আসা সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে ফিরিয়ে দিতে হবে। চিকিৎসা ও খাদ্যসামগ্রী দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসা লোকজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী।

এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে নির্বাচন চলায় অভিবাসন নিয়ে কোনোরকম নমনীয়তা দেখাতে চাইছে না ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

যদিও দীর্ঘ দিন ধরে ভারত ও মিয়ানমার একে অপরের সীমান্তবর্তী নাগরিকদের বেলায় ‘মুক্ত চলাচল নীতি’ অনুসরণ করে। এর আওতায় দুই পাশের গ্রামগুলোর বাসিন্দারা অন্য দেশের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরে যেতে পারে এবং সর্বাধিক ১৪ দিন অবস্থান করতে পারে। তবে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর গত বছর মার্চে এই সুবিধা বন্ধ রাখা হয়েছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন