ইসলামে নারীর মর্যাদা যেমন

  07-01-2017 01:45AM


পিএনএস, ইসলাম : পৃথিবীতে ইসলামই সর্বপ্রথম নারীদের যথাযোগ্য সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলাম পূর্বযুগে নারীদের মানুষ হিসেবে গণ্য করা হতো না। স্ত্রী হিসেবে তারা ছিল চরম অবহেলার শিকার। কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণকে সামাজিক কলঙ্কের বোঝা মনে করে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। সমাজে নারী হয়ে জন্ম নেওয়া ছিল অভিশাপ।

কিন্তু ইসলামের আগমনে নারীর প্রতি এ জঘন্য অত্যাচারের অবসান ঘটে। নারীর জীবনে আসে অনেক পরিবর্তন। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ঘোষণা দেন। এভাবে ইসলামই সর্বপ্রথম নারীদের সমাজে স্বাধীন, সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার পথ প্রদর্শন করে।

ইসলাম নারীকে সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে কন্যা, স্ত্রী ও মা হিসেবে।
* কন্যা হিসাবে মর্যাদা-
পবিত্র কুরআন ঘোষণা করেছে- কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে তোমাদের খুশি হওয়া উচিত।
হাদীস শরিফে বর্ণিতি আছে- যখন কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হয় তখন আল্লাহপাক ফেরেশতাদের পাঠান। তারা এসে বলেন, পরিবারের সবার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর তারা তাদের বাহু দিয়ে কন্যা সন্তানটিকে আগলে রাখে এবং তার মাথায় হাত রেখে বলে এক অবলা হতে আর এক অবলা বের হয়েছে। যে ব্যক্তি এর রক্ষণাবেক্ষণে মনোযোগী হবে সে কেয়ামত পর্যন্ত সাহায্য পাবে।(আবু দাউদ শরিফ)
*স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা-
স্ত্রী হিসাবে ইসলাম নারীর মর্যাদা দিয়েছে। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- তারা তোমাদের পরিচ্ছেদ এবং তোমরাও তাদের পরিচ্ছেদ। (সূরা বাকারাহ-১৮৭) পবিত্র কুরআনে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক মনিব দাসীর মতো নয়, বরং অত্যন্ত গভীর বন্ধুত্ব ও ভালবাসায় পরিপূর্ণ। (সূরা রুম: ২১)
*ইসলাম মায়ের মর্যাদা-
ইসলাম সবচেয়ে মায়ের মর্যাদা দিয়েছে। এত মর্যাদা অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত” নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এই ঘোষণা নারীকে আরো মর্যাদাবান করেছে।
একজন সাহাবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকটে এসে প্রশ্ন করলেন আমার নিকট খেদমত পাওয়ার বেশী হকদার কে? জবাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- তোমার মা, দ্বিতীয়ত তোমার মা, তৃতীয়ত তোমার মা, অত:পর পিতা। (সহীহ বুখারী) একাধিকবার মায়ের কথা বলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারী জাতিকে সমাজে সম্মান দিয়েছেন।
ইসলাম নারীদের প্রকৃত অধিকার দিয়েছে। সুন্দরভাবে সমাজে আত্মসম্মানের সাথে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছে। অমর্যাদা আর গ্লানির হাত থেকে রক্ষা করে শ্রদ্ধার সর্বোচ্চ আসন দান করেছে।
পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই ইসলাম নারীর নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলাম নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিয়েছে। কুরআনে সুষ্পষ্ট ঘোষণা এসেছে- পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ।(সুরাহ নিসা- ৩২)
আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আলোকে নিজেদের জীবন গড়ে তোলা এবং নারীকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা। তবেই সমাজ তথা দেশ থেকে দূর হবে নারী নির্যাতনের মতো ভয়াবহ অপরাধ।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন