আল্লাহর পথে এসে আমি ঠকিনি: হ্যাপী

  19-01-2017 08:08AM

পিএনএস: এক সময়ের আলোচিত ও সমালোচিত অভিনেত্রী ছিলেন নাজনীন আক্তার হ্যাপী। ক্রিকেটার রুবেলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। এরপর হঠাৎই শোবিজ দুনিয়া থেকে হারিয়ে গেলেন। বেছে নেন ধর্মকর্মের পথ। এরপর থেকে অামূল পরিবর্তন। এক সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী এখন হিজাবী ও ধর্মপরায়ণ নারী।
রুবেলের সাথে ফেলে আসা অতীত স্মৃতিকে মুছে ফেলে আবার নতুন করে জীবন শুরু করেছেন হ্যাপী। মিরপুর মাদ্রাসার এক শিক্ষককে বিয়ে করেছেন হ্যাপী। বিয়ের পর স্বামী নিয়ে যারপরনাই খুশি সাবেক এই মডেল তারকা। ঠিক সেটাই ফুটে উঠে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে।
গত (১৬ জানুয়ারি) সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হ্যাপী একটি স্ট্যাস দিয়েছেন। পাঠকদের জন্য হ্যাপীর সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুরে ধরা হলো।
‘আল্লাহর পথে এসে আমি ঠকিনি আলহামদুলিল্লাহ! ইনফ্যাক্ট কেউ-ই ঠকে না। অনেকের ধারণা, হয়তো শরীয়াতের সব নিয়ম-কানুন মেনে চলা জীবনটায় কেমন যেন বিস্বাদ! তারা যদি জানতো ইসলামের জীবনব্যবস্থা কত চমৎকার,তাহলে দুনিয়ার সব সম্পদ তাদের পায়ের নিচে এনে দিলেও, তা পা দিয়ে সরাতে দ্বিতীয় বার ভাবতো না।
আমাকে আল্লাহ কোথা থেকে কোথায় নিয়ে এসেছেন! আল্লাহু আকবার! আমার কখনোই মনে পড়ে না আমি আল্লাহকে বলেছি,আল্লাহ আমাকে হেদায়েত দিন, কখনো বলিনি আমাকে দুনিয়ার অন্ধকার থেকে ইসলামের আলোয় পথ দেখান।শুকরিয়া আদায় করে শেষ হবে না। আল্লাহ আমার মত গুনাহগার এক বান্দিকে সহীহ পথ দেখালেন। আলহামদুলিল্লাহি রব্বুল আলামীন!
এখন আমার করণীয় বোকাদের দলে না গিয়ে যত কষ্টই হোক এই পথ আকড়ে ধরে রাখা। আমার মত আমাতুল্লাহ এই পথ থেকে বিচ্যুত হলে আমার মহান আল্লাহর কিছুই আসবে যাবে না,যা হবার তা হবে আমার। আল্লাহ পথ দেখিয়েছেন বাকি কাজটা আমার, আল্লাহর উপর একিন রেখে এই পথ পাড়ি দিতে হবে, আল্লাহই সাহায্য করবেন ইনশাআল্লাহ!
বিয়ের আগে আল্লাহর কাছে শুধু চাইতাম, আল্লাহ যেন আমাকে দ্বীনদার একজন স্বামী দেন।যার উসিলায় আমি আরও বেশি দ্বীনের উপর উঠতে পারি। আল্লাহ কবুল করলেন আলহামদুলিল্লাহ! আগে যখন তালিমে যেতাম তখন যারা তালীম করেন তাদের দেখে আমার মনে খুব শখ জাগতো আমিও একদিন তালিম করব এভাবে।আমার মুখ দিয়ে আল্লাহ তার দ্বীনের কথা অন্যদের শুনাবেন। আল্লাহ কবুল করেছেন আলহামদুলিল্লাহ!এখন আমি আমার এলাকায় নিয়মিত মেহনত করি আলহামদুলিল্লাহ।মাস্তুরাত জামাতেও আল্লাহ নেন। মাস্তুরাত জামাত এবং এলাকার কাকরাইল মসজিদ অনুমদিত তালিম পয়েন্ট তো মেহনত করার অনেক বড় ময়দান আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ সবার মেহনত কবুল করুন।
আমার স্বামী যখন বলে, “তুমি মাঝে মাঝে রান্না করে আমার প্রতি অনেক এহসান করো,না হলে অফিস করে আবার রান্না করে তোমাকে ঠিকমত খাওয়ানো আমার জন্য খুব কষ্ট হয়ে যেত।তোমাকে খাওয়ানোর দায়িত্ব তো আমার।রান্না করা বা কোনো কাজ করা তো তোমার দায়িত্ব না।অনেক অনেক জাযাকিল্লাহ।” বাসায় খাদেমা তো আছেনই তবুও আমার যা ব্যক্তিগত কাজ সবই আমার স্বামী করেন।মাইগ্রেনের মাথা ব্যথাটা শুরু হলে ঘন্টার পর ঘন্টা নন স্টপ মাথা টিপে দিতে থাকেন। আর তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে আমার এই সামান্য ব্যথা দেখে।সুবাহানআল্লাহ!আর আল্লাহর কাছে শুধু আমার জন্য দোয়া করতে থাকেন।আলহামদুলিল্লাহ!
আমি বাসার নিচ পর্যন্ত গেলেও তিনি অসস্তিতে থাকেন, আমার কোনো অসুবিধা হবে নাকি, সেটা ভেবে। সবসময় তিনি আমার সাথেই থাকেন।একটুও আমাকে একা বের হতে দেন না আলহামদুলিল্লাহ!তার মুখে আমার অতীতের একটা কথাও আজ পর্যন্ত শুনলাম না।তিনি শুধু তার স্ত্রী আমাতুল্লাহকেই চেনেন আলহামদুলিল্লাহ!
নিজের স্বামীর প্রশংসা করে তিনি লেখেন ভাল স্বামীরা কত ভাল জানলে খারাপ মেয়েরা ভাল স্বামী পেতে ভাল হয়ে যেত।হ্যাপি আরো লেখেন এত এত নিয়ামত কি মানুষ টাকা দিয়ে কিনতে পারবে? কখনোই না। একটা বেদ্বীন ছেলে তার স্ত্রীর জন্য করবে এতকিছু? কখনোই না। এই নূরানি শান্তি দুনিয়ার প্রাসাদে থেকে কি কেউ পাবে? কখনোই না। এসব আসলে তাদের জন্য যারা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাকে তাকে চিনিয়েছেন, নূরানি জীবন দিয়েছেন।
বিঃদ্রঃ দ্বীনের পথে এসে আমার হারানোর খাতা শূন্য। দ্বীনের পথে এসে পাওয়ার খাতা পরিপূর্ণ।আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ!’

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন