শবে বরাতেও ইজারাদাররা বেপরোয়া

  11-05-2017 08:20PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ঢাকার গরুর গোশত ব্যবসায়ী সমিতির মতে, চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের দৌরাত্ম্যে গরুর গোশতের দাম বাড়ছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা জানায়, চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের দৌরাত্ম্য না থাকলে গরুর গোশত প্রতি কেজি ২৫০ টাকায় বিক্রি করা যেত। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে গোশত ব্যবসায়ী সমিতির ধর্মঘটের পর ৪০০ টাকার এক কেজি গরুর গোশত দাম প্রায় ৫০০ টাকায় উঠে যায়। সেই গোশতের মূল্য আরো এক ধাপ লাফিয়ে শবে বরাতের আগের দিন ৫৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়!

শবে বরাত উপলক্ষে গরুর গোশতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গাবতলীর পশুহাটে ইজারাদারেরা অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছে। গরুপ্রতি পাঁচ-ছয় হাজার টাকা বেশি খাজনা দিতে হয়। ফলে দাম বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। দাম বাড়লেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ক্রেতাদের ভিড় ছিল।

যেসব দোকানে আগে একটি গরু জবাই করা হতো, শবে বরাত সামনে রেখে সেখানে পাঁচ-ছয়টি গরু জবাই করা হয়। আর হু হু করে ক্রেতারা কিনে নিচ্ছেন। অনেকেই দাম বেশি দেখে ফিরে যাচ্ছেন। অর্থনীতির সূত্রে বিক্রি বাড়লে যেখানে দাম কমানোর কথা, সেখানে আমাদের দেশে উল্টোচিত্র।

আর মাত্র ১৫ দিন পর রমজান মাস শুরু হবে। শবে বরাতে ৫৫০ টাকা গরুর গোশতের কেজি ছাড়িয়ে গেলে রমজানে ৬০০ টাকা হওয়ার আশঙ্কা অভিজ্ঞ মহলের। দুঃখজনক হলেও সত্য, চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের দৌরাত্ম্যের খেসারত দেবেন রোজাদাররা।

হিসাব একেবারে সোজা, সাধারণ মানুষের সমস্যাকে অগ্রাধিকার দেয়া হলে চাঁদবাজ ও ইজারাদাররা এত বেপরোয়া হতে পারত না। তাদের শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হলে বা গেলে এর কুফল ভোক্তা সাধারণকে ভোগ করতে হতো না। মূলত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার মাসুল দিচ্ছেন মুসলমানরা।

অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচলিত আইন নিজস্বগতিতে না চলা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ দায়িত্বশীলদের অবহেলায় এসব ঘটনা অব্যাহতভাবে ঘটছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, দায়িত্বশীলরা মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থাকলে পণ্যমূল্য আশঙ্কাজনক হারে বাড়ত না।

স্বপ্রণোদিত হয়ে গোশত ব্যবসায়ীরা ঘোষণা দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের দৌরাত্ম্য না থাকলে ২৫০ টাকায় গরুর গোশত বিক্রি করা সম্ভব। সে ঘোষণার ৪ মাস পরও প্রশাসন চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের দৌরাত্ম্য রোধপূর্বক ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ, সেটা স্পষ্ট।

রমজানকে সামনে রেখে চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের দৌরাত্ম্য রোধে সিটি করপোরেশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা জরুরি। পণ্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সময়ের দাবি।
লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন