৩১ আগস্ট লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হবে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’

  30-08-2017 02:07AM

পিএনএস, সৌদিআরব প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ৯ জিলহজ্ব পবিত্র হজ্ব। ৮ জীলহজ্ব মক্কার ও মদিনা থেকে আগত হাজীরা মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে সূর্যাস্তের আগেই মিনায় তাঁবুতে অবস্থান হওয়ার পর থেকেই শুরু হবে পাঁচ দিনব্যাপী পবিত্র হজ্বের আনু-ষ্ঠানিকতা। মিনায় আল্লাহর জিকির আর ইবাদতে মগ্ন থাকবেন সাথীরা।

বৃহস্পতিবার ৯ জিলহজ্ব ৩১ আগষ্ট থেকে সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন সারাবিশ্ব থেকে সমবেত হওয়া লাখ লাখ হাজী। ইহরাম পরিহিত অবস্থায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় লাখ লাখ হাজীর কণ্ঠে উচ্চারিত হবে, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি মাতা লাকা ওয়ালকুম।’ এর বাংলা অর্থ হচ্ছে, ‘আমি হাজির। হে আল্লাহ আমি হাজির। তোমার কোন শরিক নেই। সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধুই তোমার। সব সাম্রাজ্য তোমার।’

আরাফাত ময়দানের মসজিদে জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন মক্কার গ্র্যান্ড ইমাম। খুতবা পাঠ শেষে জোহর ও আছরের ওয়াক্তের মাঝামাঝি সময়ে হাজীরা জামায়াতের সাথে কছর নামাজ আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তা’আলার জিকির-আসকারে মশগুল থাকবেন। সূর্যাস্তের পর হাজীদের গন্তব্য মুজদালিফার দিকে। সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় শেষে সবাই বিশ্রাম নেবেন। মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করে আগামী ১০ জিলহজ্ব পহেলা সেপ্টেম্বর শুক্রবার মিনায় ফিরে যাবেন।

হজ্বের তৃতীয় দিন ১০ জিলহজ্ব শুক্রবার মিনায় পৌঁছার পর হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডানদিকে রেখে হাজীরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। হাজীরা মক্কায় ফিরে কাবা শরীফ ‘তাওয়াফ’ ও ‘সাঈ’ (কাবার চারদিকে সাতবার ঘোরা ও সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়ানো) করে আবার মিনায় ফিরে যাবেন।

জিলহজ্বের ১১ তারিখ (২ সেপ্টেম্বর) শনিবার মিনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজীরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের উপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত। পরদিন ১২ জিলহজ্ব (৩ সেপ্টেম্বর) রবিবার মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজীরা তিনটি শয়তানের উপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজীদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরীফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ী তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ী তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরীফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেয়ার মাধ্যমে হাজীরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজ্জব্রত পালন।

বিদায় তাওয়াফ সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রসুলুল্লাহ (সা.) ১৩ জিলহজ্ব মিনা থেকে অবসর হয়ে বিদায়ী তাওয়াফের জন্য সরাসরি বায়তুল্লাহ শরীফে যাননি। তিনি মক্কা নগরীর উপকণ্ঠে অবস্থিত আবতাহা নামক স্থানে অবতরণ করেন। এর বর্তমান নাম হচ্ছে খায়েক বনি কেনানা। এখানে তিনি জোহর, আছর, মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়েছিলেন। এরপর তিনি বায়তুল্লাহ শরীফে গিয়ে বিদায়ী তাওয়াফ করে মদিনার উদ্দেশে যাত্রা করেন।’


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন