ঘরোয়া কাজে নারীকে সহায়তা করা সুন্নত

  15-05-2019 03:04PM

পিএনএস ডেস্ক : সহমর্মিতার মাস রমজান। পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহায়তার মাধ্যমে এ মাসের ইবাদতসমূহ যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব। রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাস হলো সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মাস। (শুয়াবুল ঈমান ৩৩৩৬, সহিহ ইবনে খুযাইমা ১৮৮৭)

নারীদের ক্ষেত্রে রমজানে ঘরোয়া কাজে কিছু বাড়তি আয়োজন থাকে, সংসারের অন্যান্য দায়িত্ব ছাড়াও ইফতারি এবং রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়। অন্যদিকে রোজার দীর্ঘ উপবাসের কারণে অবসাদ ও ক্লান্তিও থাকে শরীরজুড়ে। তাই এ মাসে নারীদের ঘরের কাজে পুরুষের কিছুটা সহায়তা অনেকটা স্বস্তি এনে দেয়।

বোখারি শরিফের হাদিসে আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ঘরের মানুষের বিভিন্ন সেবায় অংশ নিতেন। অতঃপর নামাজের সময় হলে বেরিয়ে যেতেন। (হাদিস ৫০৪৮)

অন্য এক হাদিসে আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) নিজের কাপড় নিজে সেলাই করতেন, জুতা মেরামত ও সাংসারিক যাবতীয় কাজ করতেন। (ফাতহুল বারী ১৩/৭০)

এ হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, গৃহস্থালি কাজে অংশ নেয়া রাসুল (সা.)-এর আদর্শ। তাই এতে লজ্জা পাওয়া উচিত নয়।

সুরা তাওবার ৭১নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা মুমিন নর-নারীদের পরস্পর বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন; আর ভালোবাসা বা বন্ধুত্বের দাবি হলো- কাজ ভাগাভাগি করে নেয়ার মাধ্যমে সুখে-দুঃখে অংশীদার হওয়া। ফলে পারিবারিক জীবন হয় অনিন্দ্য সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ।

তা ছাড়া ঘরের নারীরাও রোজা রাখেন। এ মাসে বিভিন্ন নফল ইবাদতের প্রতি আগ্রহ তাদেরও থাকে। তাই ইফতারিতে খুব বেশি আইটেম তৈরি করার চাপ প্রয়োগ করাও অনুচিত। বরং তাদের কষ্ট লাঘব করে নফল ইবাদতে সুযোগ দেয়া প্রয়োজন।

রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের কষ্ট দূর করে, আল্লাহতায়ালা কেয়ামতের দিন তার একটি কষ্ট দূর করবেন। (সহিহ মুসলিম ৩৮)

রান্নার ক্ষেত্রে নিজের চাহিদামতো কিছু না হলে বা ঘাটতি হলে মুখ বুজে সহ্য করাও রমজানের শিক্ষা। কিন্তু পরিবারের পুরুষ সদস্যরা অনেক সময় নারীদের সামর্থ্য ও সীমাবদ্ধতার প্রতি লক্ষ্য রাখেন না; মনমতো কিছু একটার ঘাটতি হলে তারা ক্ষোভ লুকিয়ে রাখতে পারেন না। কখনও কখনও এসব ক্ষেত্রে মানসিক জুলুমের ঘটনা ঘটে যায়, যা রমজান বা অন্য মাসে- কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়।

এ ক্ষেত্রে রাসুল (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা হলো- কখনও খাবারের দোষত্রুটি না ধরা। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) কখনও খাবারের দোষত্রুটি ধরতেন না। তার পছন্দ হলে খেতেন আর অপছন্দ হলে পরিত্যাগ করতেন। (বোখারি শরিফ ৫১৯৮, ইবনে মাজাহ ৩৩৮২)

রমজান সংযমের মাস, তাই এই মাসে নিজেদের বিরক্তি বা রাগ দমন করতে হবে। নারীদের প্রতি মমতা প্রদর্শন করতে হবে, গৃহিণী ও গৃহকর্মীর কাজের বোঝা হালকা করে দিতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসে নিজের অধীনস্থদের কাজের চাপ কমিয়ে দেয়, আল্লাহতায়ালা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। (শুয়াবুল ঈমান ৩৩৩৬)

রমজানে নারী সদস্যদের কাজে সহায়তা করা, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মাধ্যমে পরিবারের চিত্রই বদলে যায়। অশান্তির পরিবর্তে প্রতিটি মানুষের সংসার হয় সুন্দর ও সুখময়।

পিএনএস-জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন