বরগুনায় খাদিজা হত্যা মামলার ৩ আসামী কারাগারে

  01-12-2016 08:15PM

পিএনএস, বরগুনা :বরগুনায় খাদিজা হত্যা মামলার আরো ৩ আসামীকে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সকালে আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলো, খাদিজার শ্বশুর আলম সিকদার, শাশুড়ী শেফালী বেগম ও মামা শ্বশুর নাসির সিকদার। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. হাছানুজ্জামান তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

বুড়িরচর ইউনিয়নের গোলবুনিয়া-ছোনবুনিয়া গ্রামের গৃহবধূ খাদিজাকে গত ১৭ অক্টোবর সকালে গলা টিপে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বাদী হয়ে ওইদিন রাতে খাদিজার স্বামী সাইদুল শিকদার, শ্বশুর আলম শিকদার, শাশুড়ী শেফালী বেগম, মামা শ্বশুর জাকির শিকদার ও নাসির শিকদারসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন। হিন্দু থেকে মুসলমান হয়ে বিয়ে করার ১ বছর ১০ মাসের মাথায়ই লাশ হয়েছে শ্রীমতি রানী নামের ওই গৃহবধূ। ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার পরে তার নাম রাখা হয়েছিলো খাদিজা বেগম।

রানী নামে বগুড়া জেলার ওই যুবতী ঢাকার একটি পোষাক কারখানায় কাজ করতো। তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কথিত বিয়ের নামে ঢাকায় একত্রে বসবাস করতো সাইদুল। আনুষ্ঠানিক বিয়ের কথা বলে ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের গোলবুনিয়া-ছোনবুনিয়া গ্রামের আলম সিকদারের ছেলে সাইদুল তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। বাড়ি এনে পারিবারিক চাপে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ওইদিনই রানীকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সাইদুল। পরে সাইদুলের বাবা-মা ও বোন অসহায় রানীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয়দের পরামর্শে রানী মোবাইল ফোনে সাংবাদিক জাকির হোসেন মিরাজ, মনির হোসেন কামাল ও জয়দেব রায়ের সহযোগিতা চায়। তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ পাঠিয়ে রানীসহ নির্যাতনকারীদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছিলো।

থানায় বসেই সাইদুলের মামা জাফর সিকদারকে অসহায় রানী বাবা ডেকেছিলেন। জাফর সিকদার তার বাবা হিসেবে ভাগ্নে সাইদুলের সাথে বিয়ে পড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বিয়ের সময় রানীর নাম পাল্টিয়ে রাখা হয় খাদিজা বেগম। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাঝে মাঝেই রানীকে নির্যাতন করা হতো। দুদিন আগেও রানীকে বেধরক পেটানো হয়েছে। ১৭ অক্টোবর সকালে ঘরের দোতলা থেকে রানীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সাবিত নামে রানীর দেড় বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।ডাক্তারী রিপোর্টেও খাদিজাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

খাদিজার স্বামীকে গ্রেফতার করা হলেও অন্য আসামীরা এতোদিন রহস্যজনক কারনে ধরা ছোয়ার বাইরে ছিলো। আজ সকালে ৩ আসামী আদালতে হাজির হয়ে এডভোকেট নজরুল ইসলাম সিকদারের মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেছিলো। বরগুনার পিপি এডভোকেট ভূবন চন্দ্র হাওলাদার ও এপিপি এডভোকেট সঞ্জীব দাসের জোড়ালো আপত্তির কারনে তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন