ঠিকাদার ও রেলওয়ের ৩ কর্মকর্তার ১০ বছর কারাদণ্ড

  26-02-2017 01:59PM

পিএনএস ডেস্ক: রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের (৩) অবহেলাজনিত মৃত্যুর মামলায় ঠিকাদার ও তিন রেলওয়ে কর্মকর্তার ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার দুপুর ১২টায় ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আকতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

একই সঙ্গে রায়ে অপর ২ আসামিকে খালাস দিয়ে দণ্ডিতদের ২ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ২ বছর করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।

দণ্ডিতরা হলেন- ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসর্স এসআর হাউজের মালিক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে আব্দুস সালাম, রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদ শাকি।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দীপক কুমার ভৌমিক এবং সহকারী প্রকৌশলী-২ মো. সাইফুল ইসলাম।

রায় ঘোষণার সময় জামিনে থাকা সকল আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালত দণ্ডিত ৪ জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত শিশু জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন ফকির সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং উচ্চ আদালতেও এ রায় বহাল থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষে কৌশলী শওকত আলম বলেন, এ রায় আমাদের সকলের জন্য শিক্ষনীয়। এ রায়ের মাধ্যমে আমরা সকলে নিজ নিজ দায়িত্বে সতর্ক হব বলে আমি মনে করি।

তবে দণ্ডিত আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিলের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন।

এর আগে আদালত মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে নিহতের বাবা বাদী নাসির উদ্দিন ফকিরসহ ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এরপর আসামিপক্ষে রেলওয়ের ঢাকার বিভাগীয় প্রকৗসলী হামিদুর রহমান ও রেলপথ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব মাসুদ করিম এবং রেলওয়ের পরিচালক (প্রকৌশল) আব্দুল হক সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করেন। এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন।

২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বেলা ৩ ঘটিকার সময় শিশু জিহাদ পাইপের মধ্যে পড়ে গেলে মিডিয়ার মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। রাতভর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হয়। পরদিন দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করেন জনৈক মজিদ, লিটু ও আনোয়ার। তাদের তৈরি একটি ক্যাচারের মাধ্যমে জিহাদকে টেনে তোলা হয়।

ওই ঘটনায় জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন ফকির ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন।

জিহাদের বাবার করা মামলায় চার মাসের মধ্যে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল শাহজাহানপুর থানার এসআই আবু জাফর জাহাঙ্গীর আলম এবং শফিকুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

কিন্তু ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে অপর ৪ জন দায়ী বলে নারাজী দাখিল করলে ২০১৫ সালের ৪ জুন সিএমএম আদালত ডিবি পুলিশকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটি অধিকতর তদন্তের পর আসামিদের অভিযুক্ত করে ডিবি পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান গত ৩১ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন