আদালতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করলেন শিক্ষক

  28-03-2017 09:55PM

পিএনএস : প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় একজন স্কুলশিক্ষক ও একজন পিয়ন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া একজন অধ্যক্ষসহ তিনজনকে এক দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বাকি চারজন আসামি কিশোর হওয়ায় তাঁদের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন ঢাকার শিশু আদালত।

যে দুজন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তাঁরা হলেন আশুলিয়ার এ এম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আতিকুল ইসলাম ও একই স্কুলের পিয়ন আবদুল মজিদ। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন এ এম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোজাফফর হোসেন, টঙ্গীর কোনিয়া কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হামিদুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম। যে চারজন কিশোরকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে, তাদের দুজনই রাজধানীর দুটি সুপরিচিত কলেজের ছাত্র। এদের মধ্যে একজন মাত্র দুই মাস আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কলাবাগান থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যায়। পরে সে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর ফের তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা গত বছর জেএসসি, এসএসসি ও চলতি বছরের এসএসসির পরীক্ষা আগে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি, ইমো, হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র সরবরাহ করার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারও করেছেন। অধ্যক্ষ মোজাফফর তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে গত বছরের ১০ এপ্রিল উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র, গণিতের প্রথমপত্রের প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে দিয়েছেন। আর কোনিয়া কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হামিদুর রহমান হোয়াটস অ্যাপে চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার গণিতের প্রশ্নপত্র, গত বছরের জেএসসি পরীক্ষার কৃষিশিক্ষা, চারু ও কারুকলার প্রশ্নপত্রের পাঁচ পাতা স্ক্রিন শট নেওয়া হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে রেখে আসামিরা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের জন্য বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের অন্যতম সদস্য আসামি শাহরিয়ার নাজিম জয়, জাহিদুল ইসলাম, বিপ্লব আহমেদ ও আশিকুর রহমান পলাতক রয়েছেন। আসামিরা স্বীকার করেছেন যে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসাধু শিক্ষক প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।

এর আগে ১ মার্চ প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে জ্ঞানকোষ একাডেমির পরিচালকসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এঁদের মধ্যে কমলাপুর শেরেবাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষকসহ দুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। তাঁদের জবানবন্দি অনুযায়ী ৭ মার্চ শেরেবাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আলিম গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন