সাতক্ষীরায় গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যায় ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

  13-07-2017 10:25PM

পিএনএস : একের পর এক বিয়ে করার প্রতিবাদ করায় যাত্রাদলের নায়িকা টুম্পা খাতুনকে গণধর্ষণের পর তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আশাশুনি উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন সরদারের ছেলে শহীদুল ইসলাম বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন।

ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ জোয়ার্দার আমিরুল ইসলাম অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আশাশুনি থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন আশাশুনি উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের টুম্পার স্বামী সাইফুল্লাহ গাজী, একই গ্রামের রিপন সরদার, আবু মুছা, খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম, দুর্গাপুর গ্রামের কামরুল ইসলাম, তার ভাই আনারুল ইসলাম, লাভলু গাজী, মহসিন সরদার, খায়রুল ইসলাম, চেউটিয়া গ্রামের কবীর হোসেন ও খুলনা জেলা শহরের সোনাডাঙা গোবরচাকা মেইন রোডের চিশতি ওরফে চুন্নু। এ ছাড়া আরো পাঁচজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে আশাশুনির দুর্গাপুর গ্রামের সোনা চৌকিদারের বাড়ির পাশে মাঠে যাত্রা অভিনয়ের জন্য আসা গোপালগঞ্জ জেলা সদরের বটবাড়ি গ্রামের মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাসের মেয়ে সোমা বিশ্বাসকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের সহযোগিতায় তাকে ধর্মান্তরিত করে টুম্পা খাতুন নাম দিয়ে তাকে বিয়ে করেন একই উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মাদকাসক্ত সাইফুল্লাহ গাজি। বর্তমানে তাদের মরিয়ম নামে দুই বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

সাইফুল্লাহর প্রথম স্ত্রী বর্তমানে খাজরা সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য তমেনা খাতুন। কিছুদিন আগে সাইফুল্লাহ আরও এক যাত্রা শিল্পীকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তার ছয় স্ত্রী। এ নিয়ে টুম্পার সঙ্গে সাইফুল্লাহর বিরোধ চলে আসছিল। প্রতিবাদ করায় সাইফুল্লাহ টুম্পাকে নির্যাতন করত।

গত ৯ জুন রাত ৩ টার দিকে দিকে টুম্পা তার স্বামীর বাগদা চিংড়ির হ্যাচারির বাসায় স্বামীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। এ সময় স্বামীর সহায়তায় চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমসহ কয়েকজন তাকে ধর্ষণ করে। পরে গায়ে কেরাসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাতেই তাকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে আনা হয়। পরে তাকে খুলনায় নেওয়া হলে ১৬ জুন মারা যান টুম্পা। তাকে পিরোজপুরে এনে দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদুর রহমান শাহিন জানান, আদালতের নির্দেশ হাতে পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন