ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের অনুলিপি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন

  16-08-2017 03:52PM


পিএনএস ডেস্ক: সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের অনুলিপি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

জানা গেছে, বুধবার দুপুরে অ্যাটর্নি জেনালের পক্ষে এ ধরনের একটি আবেদন করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার দপ্তরে।

এর আগে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ে গ্রাউন্ড তৈরি করে রিভিউ আবেদন করা হবে।

প্রসঙ্গত, বিচারকদের অপসারণে সংসদ সদস্যদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে।

এই রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ থেকে আবার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের নিকট ফেরত আসল. ( অনুচ্ছেদ ৯৬ (৩))

এর আগে ১ জুন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ (সিএভি) রাখা হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। পরে রিটের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ তার পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন।

এর আগে গত ৩০ মে দশম দিনের আপিল শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত প্রদান শেষ হয়। মোট ১০ জন অ্যামিকাস কিউরি আদালতে মতামত দিয়েছেন। যার মধ্যে নয়জনই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মতামত দেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য আদালত ১২ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন। ১২ জনের মধ্যে ১০ জন আদালতে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। অ্যামিকাস কিউরি নিযুক্ত হলেও ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মতামত দেননি।

বক্তব্য প্রদান করা ১০ জনের মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি ষোড়শ সংশোধনী রাখার পক্ষে মত দেন। বাকিরা এই সংশোধনী বাতিলের পক্ষে নিজেদের যুক্তি তুলে ধরেন।

সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মত দেয়া ৯ অ্যামিকাস কিউরি হলেন- ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বিচারপতি টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া, এম আই ফারুকী এবং এ জে মোহাম্মদ আলী।

বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পুনরায় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। এরপর তা ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এ অবস্থায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

ঐ আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ষোড়শ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে গত ৫ মে আদালত সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন। তিন বিচারকের মধ্যে একজন রিট আবেদনটি খারিজ করেন।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর থেকেই সরকার ও বিরোধীপক্ষে তুমুল বাকযুদ্ধ তুলছে এ নিয়ে। রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। ভেতরে ভেতরে এ নিয়ে সরকারের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন