বিসিবিকে আইনী নোটিস

  18-09-2017 04:10PM

পিএনএস ডেস্ক: বিসিবির গঠনতন্ত্র-সংক্রান্ত এক মামলায় আপিলের রায়কে নিজেদের পক্ষে দাবি করে ২ অক্টোবর বার্ষিক সাধারণ সভা ও বিশেষ সাধারণ সভার তারিখ ঘোষণা করায় ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে আইনী নোটিশ পাঠিয়েছেন রিটকারি।

মামলার বাদী স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের দাবি, রায় অনুযায়ী বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পরিষদের কোনো বৈধতা নেই। সাধারণ সভা ঘোষণা করার। তারপরও তা করায় সাধারণ সভা ও বিশেষ সভাসহ বোর্ডের সব কার্যক্রম বন্ধের জন্য বিসিবি, বিসিবি সভাপতিসহ সাত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বরাবর তিনি এ আইনি নোটিশ পাঠান।

বিসিবি ও বিসিবি সভাপতি ছাড়াও এটি পাঠানো হয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। জানিয়েছেন নোটিশ প্রেরণকারির আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।

নোটিশে বলা হয়েছে, এ নোটিশ প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিসিবিকে বার্ষিক ও বিশেষ সভা আয়োজনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে বর্তমান বোর্ড সভাপতি এবং পরিচালনা পর্ষদকে তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আইনি নোটিশ পাওয়ার পর কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো, সেটি আগামী তিন দিনের মধ্যে না জানালে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক জানান, ‘২০১২ সালের বিসিবির সংশোধিত গঠনতন্ত্র অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি রায় দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ রায় অনুযায়ী নির্বাচিত বিসিবির বর্তমান কমিটির কোনো বৈধতা নেই। তিনি বলেন, যেহেতু গঠনতন্ত্রই অবৈধ তাহলে ওই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গঠিত বর্তমান কমিটিও অবৈধ। সে জন্য আমরা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে বলেছি বিসিবি যেন এজিএম, ইজিএমসহ কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। নয়তো এ বিষয়ে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।’

গত ২৬ জুলাই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি), এ পর্যবেক্ষণ দিয়ে বিসিবির সংশোধিত গঠনতন্ত্র অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে আপিল নিষ্পত্তি করে দেয় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।

তখন আইনজীবীরা জানায়, আদেশ অনুযায়ী এখন থেকে বিসিবির গঠনতন্ত্র বিসিবিই সংশোধন করতে পারবে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) নয়।

আদালতে বিসিবির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি বিসিবির সংশোধিত গঠনতন্ত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এরপর দিন ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ও বিসিবি। ওইদিনই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সংশোধিত গঠনতন্ত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। পরে বিভিন্ন সময়ে এ স্থগিতাদেশ বাড়ানো হয়।

২০১২ সালের নভেম্বর গঠনতন্ত্রের সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন বিসিবির সাবেক পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোবাশ্বের হোসেন এবং বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের সভাপতি ইউসুফ জামিল বাবু।

রিট আবেদনে বলা হয়, বিসিবির বিশেষ সাধারণ সভায় কাউন্সিলরদের মতামত নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে গঠনতন্ত্র পাঠানো হয়েছিল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ গঠনতন্ত্র যাচাই বাছাই করে সংশোধন করে বিসিবিতে ফেরত পাঠায়। ফের বিসিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে সাধারণ সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে এনএসসি। বিষয়টি নিয়ে রিট করা হয়। এ রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালত রুল জারি করে। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন