সেই চালক গ্রেফতার

  31-05-2019 01:54AM



পিএনএস ডেস্ক: সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সাহসী কনস্টেবল পারভেজ মিয়াকে চাপা দেয়া সেই কাভার্ডভ্যান চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কাঁচপুর এলাকা থেকে চালক মো. জাহিদুল ইসলাম ও হেলপার মো. ইয়াসিন উল্লা মামুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গজারিয়ার ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ কবির হোসেন বলেন, কনস্টেবল পারভেজকে চাপা দেয়ার সময় কাভার্ডভ্যান চালক মো. জাহিদুল ইসলাম পাশে বসা ছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন হেলপার মো. ইয়াসিন উল্লা মামুন। যার গাড়ি চালানোর কোনো লাইসেন্স নেই।

তিনি আরও বলেন, তারা ন্যাশনাল ক্যারিয়ার কোম্পানির কাভার্ডভ্যানের চালক ও হেলপার ছিলেন। গাড়ির চালক জাহিদুলের লাইসেন্সটিও পূর্ণাঙ্গ না। তারা দুজনই নোয়াখালীর কবিরহাট থানার আশরাফপুর গ্রামের বাসিন্দা।

সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে এখন হাসপাতালে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা একটু উন্নতির পথে। পারভেজ গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের হোসেন্দি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেমের ছেলে।

উল্লেখ, গত ২৭ মে সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ার জামালদি বাসস্ট্যান্ডের সামনে একটি বেপরোয়া কাভার্ডভ্যান কনস্টেবল পারভেজকে ধাক্কা দেয়। এদে গুরুতর আহত হন পারভেজ। একইসঙ্গে ডান পায়ের গোড়ালি ও হাতে মারাত্মক আঘাত পান। প্রথমে ‘ট্রমালিংক’র স্বেচ্ছাসেবক দল তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকার রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পঙ্গুতে চিকিৎসাধীন কনস্টেবল পারভেজের জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের চিকিৎসকরা পারভেজের জীবন বাঁচাতে তার পা কেটে ফেলার পরামর্শ দেন। পরে পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে অস্ত্রোপচার করে তার পা কেটে ফেলা হয়।

২০১৭ সালের ৭ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চাঁদপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডোবায় পড়ে যায়। যাত্রীসহ বাসটি ডোবায় ডুবে গেলে তৎকালীন দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ মিয়া ইউনিফর্ম পরেই পানিতে নেমে পড়েন এবং ২০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘হিরো’ খেতাব পান পারভেজ।

পারভেজ মিয়ার ওই সাহসিকতার জন্য দেয়া হয় পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)। এছাড়া নগদ টাকা ও মোটরসাইকেল দেন আইজিপি। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি বিপিএম পদক পাওয়া পারভেজ এক সাক্ষাৎকারে জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘আমার স্বপ্ন এখন ইন্সপেক্টর হওয়া।’

পিএনএস/ হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন