নুসরাত হত্যা মামলা : ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ

  10-06-2019 02:17PM

পিএনএস ডেস্ক : ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া চার্জশিট আমলে নিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করা হয়েছে।

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুন-উর রশিদের আদালত সোমবার চার্জশিট গ্রহণ ও আদেশ দেন। এদিন আদালতে আসামিদের হাজির করা হয়। আদালত নুসরাত হত্যায় গ্রেফতার ২১ জনের মধ্যে পাঁচজনকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে, তারা হলেন- সোনাগাজী সিনিয়র মাদ্রাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম (৫০), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), আফছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন (২২), মোহাম্মদ শমীম (২০) ও মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) প্রিয়রঞ্জণ দত্ত জানান, কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার ২১ আসামিকে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে দেয়া চার্জশিট আমলে নেন। আগামী ২০ জুন চার্জ গঠনের দিন ধার্য করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, প্রভাষক আবসার উদ্দিন, মো. শামিম, ইফতেখার উদ্দিন, নুর উদ্দিন জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

একইভাবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামের নাম চার্জশিটে না থাকায় মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলার বাদীপক্ষে রয়েছেন অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু এবং আসামিপক্ষে রয়েছেন অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন নান্নু, তাজুল ইসলামসহ কয়েকজন আইনজীবী।

অভিযোগপত্রে ১৬ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাণদণ্ডের সুপারিশ করে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই। মামলার তদন্তকারী কর্তাকর্তা শাহ আলম ২৮ মে এই চার্জশিট জমা দেন।

২৬ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তার অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানি করেন।

রাফি এর প্রতিবাদ করেন এবং এ বিষয়ে রাফির মা শিরীন আক্তার মামলা করলে পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান।

ওই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল নুসরাত ও তার পরিবারকে। কিন্তু মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন। আগুনে শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রাফি ১০ এপ্রিল রাতে হাসপাতালে মারা যান। তিনি বলেন, রাফির গায়ে আগুন দেয়ার পর ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন