আবরারের বাবার জন্ডিস, সাক্ষ্য পিছিয়ে ৫ অক্টোবর

  20-09-2020 03:48PM

পিএনএস ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ২৫ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি আজ। মামলার বাদী আবরারের বাবা বরকত উল্লাহর অসুস্থ থাকায় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত।

রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য ছিল।

কিন্তু আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের করা সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর টানা শুনানির দিন ঠিক করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল জানিয়েছেন, আজ আবরারের বাবা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আদালতে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ায় আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের শুনানির নতুন দিন ঠিক করেন।

এদিন মামলার ২৫ আসামির মধ্যে ২২ জনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে গেল ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আলোচিত এ হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

গেল ২ সেপ্টেম্বর আবরার হত্যার মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। ওইদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী ২৫ আসামির অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি করেন।

ওইদিনই মামলার ২৫ আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল, এহসানুল হক সমাজি ও আবু আব্দুল্লাহ।

গেল ২২ মার্চ একই আদালত বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলার চার্জ শুনানির জন্য ৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু সারা দেশে নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে নির্ধারিত দিনে শুনানি হয়নি। এরপর গত ৯ আগস্ট আদালত চার্জ শুনানির জন্য ২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

আবরার হত্যা মামলার ২৫ আসামি হলেন- বহিষ্কৃত বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মো. মুজাহিদুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।

তাদের মধ্যে প্রথম ২২ জন কারাগারে ও শেষের ৩ জন পলাতক আছেন। এর মধ্যে ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ হত্যা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালত অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর ৫ দিন পর ১৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত।

এর পর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় সিএমএম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হলে গত ২১ জানুয়ারি দায়রা জজ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেন।

গেল বছরের ৫ অক্টোবর বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আবরার ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে-বাংলা হলে নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা। নিহত আবরার বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের মেধাবী ছাত্র ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহর বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও তদন্তকালে এজাহার বহির্ভূত আরও ৬ জনকে মামলার আসামি করা হয়।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন