নোয়াখালীতে গৃহবধূকে নির্যাতন: নারী সংগঠনের ভূমিকায় হতাশা হাইকোর্টের

  06-10-2020 03:09AM

পিএনএস ডেস্ক : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র ও নগ্ন করে নির্যাতনের ঘটনায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি প্রকাশ হওয়ার ঘটনায় কোনো মানবাধিকার ও নারী সংগঠন আদালতের শরণাপন্ন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন আদালত।

আদালত বলেছেন, ৩২ দিন পর ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। এর আগে পুলিশ কী করেছে? অন্যদিকে, কোনো মানবাধিকার সংগঠন এবং নারী সংগঠনের আদালতের শরণাপন্ন না হওয়ায় তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

সোমবার (৫ অক্টোবর) হাইকোর্টর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এমন মন্তব্য করে হতাশা প্রকাশ করেন। এরপর রুল জারির পাশাপাশি ৫ দফা নির্দেশনা দেন আদালত।

শুনানির সময় আদালত আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, এই ভিডিও যদি ভাইরাল না হতো তাহলে তো পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত না। ঘটনা সবার চোখের আড়ালেই থেকে যেত।

একইসঙ্গে, এ ঘটনায় কোনো মানবাধিকার সংগঠন বা নারী সংগঠন প্রতিকারের জন্য আদালতের শরণাপন্ন না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমরা আশাহত হয়েছি যে অধিকার, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্লাস্টের মতো সংগঠন বা কোনো নারী সংগঠন এগিয়ে আসেনি।

শ্লীলতাহানির ঘটনার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে এ বিষয়ে আদালতে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিনউদ্দিন, সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট ইয়াদিয়া জামান, জামিউল হক ফয়সাল, রাশিদা চৌধুরী নিলু, তানজীম আল ইসলাম প্রমুখ।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। ৫ অক্টোবর সকালে নারী নির্যাতনের এ ঘটনা আদালতের নজরে এনে ওই ভিডিও অপসারণসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আরজি জানান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। আদালত তাদেরকে লিখিত আবেদন করতে বলেন। শুনানির জন্য বেলা ২টা ৩০ মিনিট সময় ঠিক করেন।

এরপর নির্ধারিত সময়ে শুনানি শেষ করে হাইকোর্ট কয়েকটি আদেশের পাশাপাশি একটি রুল জারি করেন। পরে অ্যাডভোকেট এএম জামিউল হক ফয়সাল সাংবাদিদের জানান, আদালত কয়েকটি নির্দেশনাসহ একটি রুল জারি করেছেন। কয়েকটি অবজারভেশনও দিয়েছেন।

তবে আদালত একটি বিষয়ে উষ্মা দেখিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হতাশা ব্যক্ত করে আদালত নারী সংগঠনের বিষয়ে বলেন, দেশে এত এত নারী সংগঠন। তারা আজ কোথায়? তারা কেন এ ঘটনার বিচার চেয়ে আদালতের কাছে আসলো না। সত্যিই অবাক হলাম। এত নারী সংগঠন থাকা সত্ত্বেও একটি নারী সংগঠনও নারী নির্যাতনের এ রোমহর্ষক ঘটনার বিচার চেয়ে আদালতে তেলেনি।

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নারীর ওপর অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৩২ দিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গত ৪ অক্টোবর প্রকাশ্যে আসে।

এর আগে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। এখন পর্যন্ত চারজন গ্রেফতার হয়েছেন।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন