পি কে হালদারকে বিদেশে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে দুদক: হাইকোর্ট

  12-03-2021 12:47AM

পিএনএস ডেস্ক : আলোচিত পিকে হালদার প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেছেন, বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত চিঠি ১৩ ঘণ্টা পর ইমিগ্রেশনে পাঠিয়ে পিকে হালদারকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে দুদক। পিকে হালদার কাণ্ডে জড়িত আনান কেমিক্যাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের শুনানির সময় বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এ সময় আদালত ইন্টারনেটের যুগে এসেও একটি চিঠি পাঠাতে এত সময় লাগানোর কারণে কড়া সমালোচনা করেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পী।

এর আগে গত ১ মার্চ ইমিগ্রেশন পুলিশ হাইকোর্টকে জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নয়, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সড়ক পথে দেশত্যাগ করেছেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার।

ইমিগ্রেশন পুলিশ আদালতকে আরো জানান, ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর দুদক ইমিগ্রেশন পুলিশকে জানানোর জন্য বিশেষ শাখার (এসবি) সদর দফতরকে চিঠি দেয় যেন পি কে হালদার দেশ ত্যাগ না করতে পারেন। এসবি সদর দফতর দুদকের ওই চিঠি হাতে পায় ২৩ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টায়। ওইদিন বিকাল ৫টা ৪৭ মিনিটে ইমিগ্রেশন পুলিশের সব শাখায় চিঠির কপি পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে ইমিগ্রেশন পুলিশ চিঠি পাওয়ার দুই ঘণ্টা ৯ মিনিট আগেই (২৩ অক্টোবর, বিকাল ৩টা ৩৮ মিনিটে) পি কে হালদার বেনাপোল দিয়ে দেশ ত্যাগ করেন। অর্থাৎ পিকে হালদারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির চিঠি পাওয়ার আগেই তিনি দেশ ত্যাগ করেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কীভাবে দেশত্যাগ করলেন—তা জানতে চান পৃথক হাইকোর্ট বেঞ্চ। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে পিকে হালদার যেদিন দেশত্যাগ করেছিলেন, সেদিন বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের দায়িত্বরতদের এবং দুদকের দায়িত্বে কে কে ছিলেন, তারও তালিকা দাখিল করতে বলেন আদালত। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি বিভাগে ২০০৮ সাল থেকে কর্মরতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেফতার করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বেশ কিছু আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারে জড়িত পিকে হালদার আছেন কানাডায়। ওই দেশে যাওয়ার আগে সে যাতে কোনভাবেই বাংলাদেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলো দুদক। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের হাতে ঐ চিঠি পৌঁছানোর প্রায় এক ঘণ্টা পূর্বেই ২০১৯ সালের ২৩ অক্টৈাবর যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশত্যাগ করেন পিকে হালদার। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার এমন অতি গোপনীয় চিঠির বিষয়বস্তু পিকে হালদার কিভাবে জ্ঞাত হল বা তাকে কে অবহিত করল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

পিএনএস-জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন